ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বৃহস্পতিবার রাতে ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েল। বিমান হামলার আগে, ইসরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ ইরানের ভেতরে একটি গোপন ঘাঁটি গড়ে তোলে। ওই ঘাঁটিতে ড্রোনসহ হামলার বিভিন্ন সরঞ্জাম মজুদ করেছিল ইসরায়েল।

শুক্রবার দেশটির এক শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম হারেৎজ। দীর্ঘ দিনের ব্যাপক প্রস্তুতির পরই ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল।

ওই কর্মকর্তা জানান, বহু আগে থেকেই ড্রোনগুলো চোরাপথে ইরানে ঢোকানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতের হামলার সময় সেগুলোই ব্যবহার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, যখন ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর হামলা চলছিল তখনই মোসাদের সেই গোপন ঘাঁটিতে প্রস্তুত রাখা কিছু প্রযুক্তি সক্রিয় করে সরাসরি হামলা চালানো হয়।

সূত্রটি জানিয়েছেন, বিস্ফোরকভর্তি ড্রোন ইরানের রাজধানী তেহরানের কাছে একটি সামরিক ঘাঁটিতে থাকা ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র লাঞ্চার লক্ষ্য করে নিক্ষেপ হয়। একই সময়ে, মোসাদের কমান্ডো দলগুলো ইরানের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে অভিযান চালায়। এসব হামলার টার্গেট ছিল ইরানের আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। তারা সুনির্দষ্টভাবে এসব স্থানে সফল হামলা চালায়।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ইরানের ভেতরে মোসাদ কিছু যানবাহনে আক্রমণাত্মক প্রযুক্তি ও অস্ত্র স্থাপন করা হয়েছিল। এসবের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে দেওয়া, যাতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান কোনো বাধা ছাড়াই হামলা চালাতে পারে। ইসরায়েলি বিমান হামলা শুরুর মুহূর্তেই এসব সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়।

শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, মোসাদের এই জটিল অভিযানের পরিকল্পনা দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল। বহু বছরের গোয়েন্দা তথ্য এতে কাজে লাগানো হয়েছে। 

তার ভাষায়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) ও মোসাদ বহু বছর ধরে যৌথভাবে ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনীর শীর্ষ সদস্য ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করেছে। যাদের অনেকে পরবর্তীতে নিহত হন। তারা ইরানের কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র অবকাঠামো সম্পর্কেও বিস্তারিত ফাইল প্রস্তুত করেছে।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর শত শত যুদ্ধবিমান ইরানের একশরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়। যার মধ্যে ছিল পারমাণবিক স্থাপনা ও শীর্ষস্থানীয় ইরানি কর্মকর্তাদের অবস্থান। 

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই অভিযানে ইরানের দুইজন সর্বোচ্চ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন।

ওএফ