Logo

আন্তর্জাতিক

দিনে ২৮৮০ কোটি টাকা খরচ পারমাণবিক অস্ত্রে, ৭০ কোটি মানুষ অভুক্ত

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ১৫:২৪

দিনে ২৮৮০ কোটি টাকা খরচ পারমাণবিক অস্ত্রে, ৭০ কোটি মানুষ অভুক্ত

ছবি : ডয়চে ভেলে

বিশ্বে যখন ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে, ঠিক সে সময়ে বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী দেশ, বিশেষ করে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার আরও সমৃদ্ধ করছে। পাশাপাশি ক্ষমতাধর দেশগুলো তাদের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার আরও আধুনিক করছে।

সম্প্রতি কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তান সংঘাত, এখন ইরানে ইসরায়েলের হামলা ঘিরে মধ্যপ্রাচ্য সংকটেও একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তেহরানের হামলার কাছাকাছির সময়ে প্রকাশিত ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার উইপন্সের (আইসিএএন) প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ২০২৩ সালের তুলনায় গত বছর বিশ্বের নয়টি পারমাণবিক শক্তিধারী দেশ অস্ত্র সমৃদ্ধকরণে ব্যয় ১১ শতাংশ বাড়িয়েছে। দেশগুলো প্রতি মিনিটে এ খাতে খরচ করেছে ১ লাখ ৯০ হাজার ১৫১ ডলার। 

পারমাণবিক অস্ত্র মজুদের কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করে আটটি দেশ— যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স, ভারত, উত্তর কোরিয়া, পাকিস্তান, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। এর বাইরে রয়েছে ইসরায়েল। আইসিএএনের প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র একাই অন্য আট পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশের সম্মিলিত ব্যয়ের চেয়ে বেশি ব্যয় করেছে। আগের বছরের তুলনায় রেকর্ড ৫৩০ কোটি ডলার বেড়ে ২০২৪ সালে দেশটির এ খাতে মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬৮০ কোটি ডলার।

পরাশক্তি দেশ চীন পারমাণু খাতে ব্যয় করেছে ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার। অন্যদিকে আগের বছরের তুলনায় ২২০ কোটি ডলার বেড়ে যুক্তরাজ্যের মোট ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৪০ কোটি ডলার।

পারমাণবিক অস্ত্র সম্পূর্ণ বিলুপ্তির পক্ষে কাজ করছে জেনেভাভিত্তিক আইসিএএন। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে ২০২৪ সালে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে তা জাতিসংঘের বার্ষিক বাজেটের ২৮ গুণ।

কিন্তু এর বিপরীতে ধনী দেশগুলো দরিদ্র দেশগুলোতে খাদ্য সাহায্যের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে দিয়েছে। এদিকে বিশ্বে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে ২০২৫ সালে ৩০ কোটি ৭০ লাখ অভুক্ত মানুষের মধ্যে ১১ কোটি ৭০ লাখ মানুষের কাছে খাবার পৌঁছানো যাবে না। 

সংস্থাটির তথ্য অনুযাযী, ২০২৪ সালে ডব্লিউএফপি মানবিক সাহায্যের জন্য চার হাজার ৯৬০ কোটি টাকা তুলতে চেয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা এর ৪৬ শতাংশ অর্থ তুলতে পেরেছে। এই নিয়ে পরপর দ্বিতীয় বছর প্রয়োজনীয় অর্থের অর্ধেকও জোগাড় করতে পারল না জাতিসংঘ। ডব্লিউএফপি ও ফাও বলছে পৃথিবীতে প্রতিদিন প্রায় ৭০ কোটির বেশি মানুষ রাতে না খেয়ে ঘুমাতে যায়।

এদিকে এ সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় সংঘাত, চরম আবহাওয়া এবং ভয়ংকর মুদ্রাস্ফীতির কারণে। এসব কারণে আরও বেশি মানুষের কাছে মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে। কিন্তু জাতিসংঘের তহবিলে যে দেশগুলি অর্থ দেয়, তাদের দেয়া অর্থের পরিমাণ কমছে।

অন্যদিকে পশ্চিমাসহ ধনী দেশগুলিও বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও আর্থিক দিক থেকে চাপে আছে। তাছাড়া ঘরোয়া রাজনীতির কারণেও কিছু ধনী দেশ তাদের সিদ্ধান্তে বদল আনছে। জাতিসংঘকে যে দেশগুলি প্রচুর অর্থসাহায্য করে তার মধ্যে জার্মানি অন্যতম। কিন্তু ২০২৩-এর তুলনায় ২০২৪ সালে তারা ৫০ কোটি ডলার কম দিয়েছে। তাদের মন্ত্রিসভার সুপারিশ, ২০২৫ সালে একশ কোটি ডলার সাহায্য কম করা হবে। 

এছাড়া বিশ্বে ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র গত পাঁচ বছরে ছয় হাজার ৪৫০ কোটি ডলার দিয়েছে। জাতিসংঘের তহবিলের ৩৮ শতাংশ আসে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে। কিন্তু দেশটিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর সেখানেও হাওয়া বদল হয়েছে। 

ডিআর/এএ

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

জাতিসংঘ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর