
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে ভয়াবহ সংঘাতের সূচনা হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় তেহরানের শারান তেল স্থাপনায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইরান। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় শনিবার গভীর রাতে (১৫ জুন) ইসরায়েলের তেলআবিব ও হাইফা শহরে একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।
এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম ও জরুরি সেবা সংস্থাগুলো।
এর আগে ইসরায়েল দাবি করে, তারা ইরানের ভেতরে যেসব স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, সেগুলো ‘ইরানি শাসকগোষ্ঠীর পারমাণবিক অস্ত্র প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট’। তবে ইরানি সরকারি সূত্র বলছে, এসব হামলায় বেসামরিক স্থাপনা ও জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করেই আঘাত হানা হয়েছে।
ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৮০ জন নিহত ও ৮০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২০ জন শিশু রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
অপরদিকে, শনিবার রাতে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতে তেলআবিব ও হাইফার বিভিন্ন এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটেছে। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত হলেও কয়েকটি লক্ষ্যভেদে সফল হয় বলে স্বীকার করেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে এ উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান শত্রুতা বন্ধে তারা একমত। মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাই এখন সবচেয়ে জরুরি বলে মন্তব্য করেন দুই বিশ্বনেতা।
পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান ষষ্ঠ দফার পরমাণু আলোচনা স্থগিত করেছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার মধ্যে এ ধরনের আলোচনা অব্যাহত রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে এই সামরিক উত্তেজনা বড় ধরনের যুদ্ধের ইঙ্গিত দিচ্ছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল দ্রুত হস্তক্ষেপ না করলে এই সংঘাত আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সূত্র : আল জাজিরা
- এটিআর