হরমুজ প্রণালী বন্ধ করতে পারে ইরান, জ্বালানি সরবরাহ নিয়ে শঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৫, ০৯:৪১

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান পাল্টাপাল্টি হামলায় ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। এই উত্তেজনার মধ্যেই হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে তেহরান। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের তেল ও জ্বালানি অবকাঠামোয় বড় ধরনের হামলা চালালে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করাকে চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া হিসেবে বেছে নিতে পারে দেশটি।
সম্প্রতি আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসি’র জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক সিনা তুসি বলেন, ইসরায়েল যদি ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা বাড়ায়, তাহলে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে তেহরান। এটাই হতে পারে তাদের সর্বোচ্চ জবাব।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরআইএনএন জানিয়েছে, হরমুজ প্রণালী বন্ধের বিষয়টি সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।
গত শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল তেহরানসহ ইরানের বেশ কয়েকটি পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। এরপর শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায় ইরান। পাল্টা জবাবে ইসরায়েলও ইরানের বেশ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালায়। অন্যদিকে, ইরানও ইসরায়েলের হাইফা বন্দরের কাছে কিছু জ্বালানি স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে বলে খবর মিলেছে।
সিনা তুসি বলেন, আজকের হামলাগুলো বিশেষভাবে জ্বালানি স্থাপনাকে কেন্দ্র করেই হয়েছে। এই প্রবণতা চলতে থাকলে পুরো পারস্য উপসাগর অঞ্চল থেকেই জ্বালানি সরবরাহ হুমকির মুখে পড়বে।
উল্লেখ্য, হরমুজ প্রণালী হলো পারস্য উপসাগরে প্রবেশের একমাত্র নৌপথ। ইরান ও ওমানের মাঝখানে অবস্থিত এই সংকীর্ণ জলপথ দিয়েই উপসাগরীয় দেশগুলোর অধিকাংশ তেল রপ্তানি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য সংস্থা (EIA)-এর তথ্যমতে, বিশ্বের মোট তেল সরবরাহের প্রায় ২০ শতাংশই এই পথ দিয়ে পরিবাহিত হয়।
এর আগে, ২০১৯ সালেও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তেল রপ্তানির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে হরমুজ প্রণালী বন্ধের হুমকি দিয়েছিল তেহরান।
এবারের পরিস্থিতি অনেক বেশি জটিল। ইরান যদি প্রণালীটি বন্ধ করে দেয়, তাহলে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি বাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।
- এটিআর