যুক্তরাষ্ট্রের হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আগামী সোমবার (১৬ জুন) শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে, গত ৫ জুন বিচারক অ্যালিসন ডি. বোরো সাময়িকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেন। সোমবার তিনি সিদ্ধান্ত দেবেন—এই স্থগিতাদেশ স্থায়ী হবে কি না।

ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ইহুদি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ এবং ইহুদিবিরোধী আচরণকে প্রশ্রয় দিচ্ছে—এই অভিযোগের ভিত্তিতেই বিশ্ববিদ্যালয়টির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবে হাভার্ড এসব অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছে।

সর্বশেষ ঘোষণায় বলা হয়, হাভার্ড সরকারকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সম্পর্কিত তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং চীনসহ কয়েকটি বিদেশি সরকারের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন গোপন রেখেছে। এতে জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে পারে বলেই পদক্ষেপটি নেওয়া হয়েছে।

এই ঘোষণার ফলে হাভার্ডে আগ্রহী আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নতুন ভিসা প্রদান আপাতত বন্ধ এবং আগের ভিসাগুলোও বাতিলের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার কারণে ৭ হাজারেরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও সদ্য পাস করা শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এর প্রতিবাদে হাভার্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

হাভার্ড মামলায় অভিযোগ করেছে, ‘ট্রাম্পের ঘোষণাটি আদালতের আগের অস্থায়ী স্থগিতাদেশকে পাশ কাটানোর উদ্দেশ্যে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতপ্রকাশের অধিকারকে শাস্তি দেওয়ার স্পষ্ট প্রচেষ্টা।’

এদিকে, হাভার্ড ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মধ্যে আরেকটি মামলা উঠছে আগামী ২১ জুলাই। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার হাভার্ডের ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি ফেডারেল তহবিল আটকে দিয়েছে—যা নিয়ে আইনি লড়াই চলছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের বরাতে জানা গেছে, সরকার গত ৫ মে থেকে এই তহবিল বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু করে, যার সময়সীমা ১২০ দিন। হাভার্ড গত ২ জুন মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আদালতে আবেদন করে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, এর ফলে শিক্ষার স্বাধীনতা ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। শুনানির রায় আন্তর্জাতিক উচ্চশিক্ষা ও অভিবাসন নীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

কেই/এমএইচএস