চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আবারও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আমেরিকার উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি অতীতের সাম্রাজ্যগত ধ্বংসের ইতিহাস টেনে এনে বলেন, ‘যা আমেরিকা শিখতে অস্বীকার করে, ৫ হাজার বছরের ইতিহাস আমাদের তা শিখিয়েছে। সাম্রাজ্য বাইরের শত্রুতে ধ্বংস হয় না, বরং যুদ্ধযন্ত্রের অতৃপ্ত ক্ষুধায় নিজের ভেতর থেকেই ভেঙে পড়ে।’

তিনি লেখেন, খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে শক্তিশালী কিন রাজবংশ যুদ্ধরত রাজ্যগুলোকে একত্র করে। তারা মহান প্রাচীর নির্মাণ করে এবং চীনের প্রথম সম্রাটের কাছে টেরাকোটা সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর করে। কিন্তু সৈন্যদের অবিরাম যুদ্ধে বাধ্য করে এবং সাম্রাজ্যের গৌরবের জন্য জনগণের রক্ত শুষে নেওয়ার পর এই রাজবংশ মাত্র ১৫ বছরের মধ্যে ধ্বংস হয়ে যায়।

তিনি বলেন, ‘অষ্টম শতকে তাং রাজবংশ দূর-দূরান্তে কর আদায় করতো। তারা মধ্য এশিয়ায় সেনা পাঠিয়ে সামরিক ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে তোলে। শেষ পর্যন্ত আন লুশানের বিদ্রোহ চাংআন নগরীকে পুড়িয়ে দেয় এবং এই শক্তিশালী সাম্রাজ্যের পতন ডেকে আনে।’

মোঙ্গল সাম্রাজ্যের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘১৩ শতকে চেঙ্গিস খানের অজেয় অশ্বারোহী বাহিনী ইউরোপ থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়ায়। কিন্তু সেই দ্রুত সম্প্রসারণই তাদের দ্রুত পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অল্প সময়েই ধসে পড়ে।

এই তিনটি উদাহরণ টেনে শি জিনপিং স্পষ্ট করে বলেন, ‘এই ইতিহাসে আমরা যা শিখেছি, আমেরিকা তা শিখতে চায় না। সাম্রাজ্য বাইরের শত্রুতে নয়, নিজেদের যুদ্ধযন্ত্রের নিচে পিষ্ট হয়ে ধ্বংস হয়।’

যুক্তরাষ্ট্রের দিকে সরাসরি ইঙ্গিত করে তিনি আরও লেখেন, ‘৭৫০টি সামরিক ঘাঁটি দিয়ে বিশ্বকে ঘিরে রাখা এবং প্রতি বছর প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার ধোঁয়ায় উড়ে যাওয়ার সঙ্গে... আপনি (মার্কিন সাম্রাজ্য) কি ইতোমধ্যে আপনার প্যারেডে সেই প্রেতাত্মার পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন?’

চীনা প্রেসিডেন্টের এমন পোস্ট আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় তুলেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি শুধু ইতিহাসের পুনরুল্লেখ নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বিশ্বশক্তি কাঠামোর প্রতি চীন থেকে আসা সরাসরি চ্যালেঞ্জ।

• এটিআর