মুখ খুললেন ওবামা, অভিযোগের তীর ট্রাম্পের দিকে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ১৬:০৪

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা /ছবি : সংগৃহীত
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মঙ্গলবার রাতে একটি বক্তৃতায় বিরলভাবে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে মুখ খুলেছেন। তাও এমনভাবে, যা অনেকের জন্যই বিস্ময়ের ছিল।
কনেকটিকাটের হার্টফোর্ডে ‘কনেকটিকাট ফোরামে’ দেওয়া বক্তৃতায় ওবামা সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম না নিলেও তার শাসনামলের কঠোর সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে যেখানে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জনগণ ও প্রতিষ্ঠানসমূহকে ‘অস্বস্তিকর’ ত্যাগের মাধ্যমে এই গণতন্ত্র রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।
ওবামা বলেন, আমরা সবাই এখন এক পরীক্ষার মধ্যে আছি। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে—আমরা কোন পক্ষে দাঁড়াবো। এটি সহজ বা জনপ্রিয় নয়, বরং কঠিন সময়েও এই অবস্থানে থাকতে হবে।
ওবামা স্পষ্টভাবে ট্রাম্পের নাম না নিলেও তার ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন ‘বিপজ্জনকভাবে’ আরও স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের দিকে এগোচ্ছে।
তিনি পরামর্শ দেন, দেশের আইন সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়, বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান এমনকি ট্রাম্পের বিচার বিভাগের সদস্যদেরও উচিত এই সময় রক্ষাকবচ হয়ে দাঁড়ানো।
তিনি বলেন, অনেক আইন ফার্ম যদি ট্রাম্পের চাপের কাছে মাথা না নত করে, তবে তাদের অর্থনৈতিক ক্ষতি মেনে নিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। মানে এই গ্রীষ্মে হয়তো হ্যাম্পটনের বাড়ির রান্নাঘরটা আর নতুন করে সাজানো যাবে না।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও রাজনৈতিক প্রতিশোধ বা মিথ্যা তদন্তের ঝুঁকি মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে, উল্লেখ করেন ওবামা।
এই বক্তব্যের আরও একটি দিক ছিল লক্ষণীয়— পুরো অনুষ্ঠানে অডিও বা ভিডিও ধারণ নিষিদ্ধ ছিল। ফলে ওবামার এই তীব্র বার্তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে যায়।
তিনি ট্রাম্পের নাম মুখে না নিয়ে বলেন, যারা এখন ফেডারেল সরকারের নেতৃত্বে আছেন, তাদের মধ্যে উদার গণতন্ত্রের প্রতি প্রতিশ্রুতি দুর্বল।
ওবামা বলেন, সরকার এখন এমন লোকদের হাতে চলে গেছে, যাদের গণতন্ত্রের প্রতি দায়বদ্ধতা দুর্বল।
এই সময় ওবামার এমন বক্তব্য ডেমোক্রেটিক পার্টির জন্য এক ধরনের আশা হতে পারতো। কারণ, দলটি বর্তমানে একধরনের নেতৃত্বহীনতা অনুভব করছে। এমন সময়ে একজন জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী কণ্ঠ ওবামা সরাসরি ও দৃঢ় বার্তা দিলে সেটি অনেক বেশি কার্যকর হতে পারতো।
এক জরিপে দেখা গেছে, বারাক ওবামা এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় জীবিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এমনকি প্রতি পাঁচজন রিপাবলিকানের একজনও তার প্রতি সহানুভূতিশীল।
তবুও ওবামা এখনো সাবধানী। তিনি ঠিক সেইসব অবসরপ্রাপ্ত জেনারেলদের মতো, যারা ট্রাম্পকে বিপজ্জনক মনে করলেও সরাসরি কিছু বলেননি, বরং বইয়ের পাতায় ইঙ্গিতপূর্ণ সমালোচনা করেছেন। এতে তাদের সতর্কবার্তা খুব একটা প্রভাব ফেলেনি।
ওএফ