থাই প্রধানমন্ত্রীর ফোনালাপ ফাঁস নিয়ে তোলপাড় কাণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ১৭:৪৮

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা /ছবি : সংগৃহীত
ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপকে কেন্দ্র করে চরম সংকটে পড়েছেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। ক্যাম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে আলাপচারিতার অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সরকারি জোটে ভাঙনের সুর শোনা যাচ্ছে।
৩৮ বছর বয়সী পেতংতার্নের দল ‘পেউ থাই’-এর প্রধান মিত্র দল ‘ভুমজাইথাই’ বুধবার জোট ত্যাগ করেছে। এর ফলে সংসদে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হুমকির মুখে পড়েছে।
জোটের আরও দুটি দল বৃহস্পতিবার বিকেলে বৈঠকে বসবে এবং তারাও জোটে থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
ফাঁস হওয়া ফোনালাপে পেতংতার্ন হুন সেনকে ‘চাচা’ বলে সম্বোধন করেন। সীমান্ত উত্তেজনা সামলানো এক থাই সেনা কমান্ডারকে উপেক্ষা করেন।
এরপর থেকেই সমালোচকরা অভিযোগ করছেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের সেনাবাহিনীকে ছোট করেছেন এবং এক বিদেশি নেতার প্রতি অতিরিক্ত আনুগত্য দেখিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্যাম্বোডিয়ান নেতার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কথোপকথনের অডিও ফাঁস হওয়ায় আমি দুঃখিত। এটি জনমনে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
তিনি দাবি করেন, ওই আলাপ কূটনৈতিক কৌশলের অংশ ছিল, তবে বিরোধীরা তার পদত্যাগ দাবি করছে।
হুন সেন জানিয়েছেন, তিনি নিজেই ৮০ জন রাজনীতিবিদের সঙ্গে অডিওটি শেয়ার করেছিলেন এবং তাদের মধ্যেই কেউ সেটি ফাঁস করে দেয়। পরে হুন সেন নিজেই পুরো ১৭ মিনিটের অডিও তার ফেসবুকে প্রকাশ করেন।
থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ক্যাম্বোডিয়ান রাষ্ট্রদূতের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বলেছে, এই ফোনালাপ ফাঁস হওয়ায় আমরা গভীরভাবে হতাশ।
এতে আরও বলা হয়, এটি দুই দেশের পারস্পরিক বিশ্বাস ও সম্মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং সদিচ্ছার ভিত্তিতে সীমান্ত বিরোধ মেটানোর প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হবে।
সিনাওয়াত্রা পরিবার এবং হুন পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক বহু দশকের। হুন সেন ও পেতংতার্নের বাবা সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা একে অপরকে ‘গডব্রাদার’ হিসেবে সম্বোধন করতেন।
গত বছর আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্রেতা থাভিসিন মন্ত্রিসভার নিয়ম ভাঙার অভিযোগে সাংবিধানিক আদালত দ্বারা অপসারিত হলে প্রধানমন্ত্রী হন পেতংতার্ন। মাত্র ১০ মাসের মাথায় তিনিই এখন থাইল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রী। তিনি দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী। প্রথমজন ছিলেন তার ফুপি, ইংলাক শিনাওয়াত্রা।
মে মাসে এক ক্যাম্বোডিয়ান সেনার মৃত্যু দিয়ে শুরু হয় সীমান্ত উত্তেজনার নতুন অধ্যায়। এরপর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে। ক্যাম্বোডিয়া থাইল্যান্ড থেকে ফলমূল, বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট আমদানি বন্ধ করেছে। এমনকি থাই টিভি সিরিয়াল ও সিনেমাও নিষিদ্ধ করেছে। উভয় দেশ সীমান্তে চলাচলেও বিধিনিষেধ জারি করেছে।
ওএফ