গাজায় প্রকট হচ্ছে খাদ্য সংকট, অপুষ্টিতে অন্তত ৬৬ শিশুর মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ০৯:৩০

ছবি : সংগৃহীত
চলমান অবরোধ ও যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অপুষ্টিতে অন্তত ৬৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২৯ জুন) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে গাজার সরকারি মিডিয়া দপ্তরের বরাতে এ তথ্য জানানো হয়।
সরকারি দপ্তরটি জানিয়েছে, দুধ, পুষ্টিকর খাবার ও মানবিক সহায়তা ঢুকতে না দেওয়াকেই এই মৃত্যুর মূল কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে।
শনিবার দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইসরায়েলের এই অবরোধ একটি যুদ্ধাপরাধ। এটি একপ্রকার ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিত শিশু হত্যাকাণ্ড, যেখানে না খেতে দিয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যু নিশ্চিত করা হচ্ছে।’
দপ্তরটি আরও জানায়, ‘গাজার শিশুদের ওপর চলমান অপরাধ এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের লজ্জাজনক নীরবতা মানবতার প্রতি চরম অবহেলার প্রতিফলন।’
মানবিক এই বিপর্যয়ের জন্য ইসরায়েল ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির মতো পশ্চিমা মিত্রদেরও দায়ী করেছে গাজা কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে জাতিসংঘকে আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন অবিলম্বে গাজার সীমান্ত পথগুলো খুলে দেওয়া হয়।
এর আগে জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ সতর্ক করে জানায়, গাজায় অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। মে মাসেই ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী অন্তত ৫ হাজার ১১৯ শিশুকে তীব্র অপুষ্টিজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যা এপ্রিলের তুলনায় ৫০ শতাংশ এবং ফেব্রুয়ারির তুলনায় ১৫০ শতাংশ বেশি।
ইউনিসেফের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের পরিচালক এদুয়ার বেইগবেদার বলেন, ‘জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত মাত্র ১৫০ দিনে ১৬ হাজার ৭৩৬ শিশু অপুষ্টির চিকিৎসা পেয়েছে-অর্থাৎ দিনে গড়ে ১১২ জন। অথচ প্রতিটি মৃত্যুই প্রতিরোধযোগ্য ছিল। খাবার, পানি, ওষুধ -সবই সীমান্তে আটকে আছে। মানবসৃষ্ট সিদ্ধান্তের ফলেই এই মৃত্যু।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ইসরায়েলকে অবিলম্বে সব সীমান্ত দিয়ে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে।’
অন্যদিকে, শনিবার ইসরায়েল গাজার বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলা চালিয়ে অন্তত ৬০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। গাজা শহরের তুফাহ এলাকায় দুটি টানা বিমান হামলায় ধসে পড়েছে একাধিক আবাসিক ভবন। শুধু ওই এলাকাতেই নিহত হয়েছেন ২০ জন, যাদের মধ্যে ৯ জন শিশু।
- এমআই