প্রথম দেশ হিসেবে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিল রাশিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪৮

আফগানিস্তানের তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিলো রাশিয়া। বিশ্বের প্রথম কোনো দেশ হিসেবে তালেবান সরকারের নিয়োগ দেওয়া রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র গ্রহণ করেছে মস্কো। এ ঘটনাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তালেবান সরকারের প্রতি প্রথম আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তান সরকারের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি আমাদের দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গঠনমূলক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করবে।
আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তকে ‘সাহসী পদক্ষেপ’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, রাশিয়া সকল দেশের আগে এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছে। এটা অন্য দেশগুলোর জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
তবে জাতিসংঘসহ বিশ্বের কোনো বড় আন্তর্জাতিক সংস্থা এখনো তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র এখনো তালেবান নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে। এ ছাড়া আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বহু বিলিয়ন ডলারের সম্পদ জব্দ করে রেখেছে। এতে দেশটির অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কার্যত আন্তর্জাতিক লেনদেন থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করলে তালেবান দ্রুত ক্ষমতা গ্রহণ করে। তখন থেকেই রাশিয়া তালেবান প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া শুরু করে।
২০২২ ও ২০২৪ সালে তালেবান প্রতিনিধি দল রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে আয়োজিত অর্থনৈতিক ফোরামে অংশ নেয়। ২০২৩ সালে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মস্কো সফরে গিয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠক করেন।
২০২৪ সালের জুলাইয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তালেবানকে ‘সন্ত্রাসবিরোধী মিত্র’ হিসেবে অভিহিত করেন। এরপর রাশিয়ার সুপ্রিম কোর্ট তালেবানকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করে যে নিষেধাজ্ঞা (২০০৩ সাল থেকে) চালু রেখেছিল, তা তুলে নেয়।
বিশ্লেষকদের মতে, তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে রাশিয়া কেবল রাজনৈতিক বার্তা দিচ্ছে না; তারা আফগানিস্তানকে ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অংশীদার ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার অংশীদার হিসেবেও দেখছে। বিশেষ করে আইএসআইএস (দায়েশ)-এর বিরুদ্ধে তালেবানের অবস্থানকে গুরুত্ব দিচ্ছে মস্কো।
ইতোমধ্যে রাশিয়া কাবুলে ব্যবসায়িক কার্যালয় খুলেছে এবং আফগানিস্তানকে গ্যাস পরিবহনের ট্রানজিট হাব হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনাও সামনে এনেছে।
- এটিআর