যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কে কাঁপছে এশিয়ার শেয়ারবাজার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৫, ০৯:২৯

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির প্রভাব পড়েছে এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোতে। শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন উর্দু। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সকালে বাজার খুলতেই জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানের বাজারে বড় ধরনের দরপতন দেখা গেছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বৈশ্বিক পর্যায়ে নতুন ও আগের চেয়ে কড়াকড়ি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এর জেরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়ে, যার প্রভাব পড়েছে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের বড় বড় শেয়ারবাজারগুলোতে।
সংবাদমাধ্যটি বলছে, জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কসপি সূচকে বড় ধরনের ধস নেমেছে—সূচকটি এক লাফে ৩ দশমিক ২ শতাংশ নেমে গেছে। তাইওয়ানের TAIEX সূচকও শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। তবে, ব্যতিক্রম হংকংয়ের হ্যাংসেং সূচক। দেশটিতে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি দেখা গেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্কনীতি বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিবেশকে আরও উত্তপ্ত করে তুলছে। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা পরিস্থিতিকে ‘ট্যারিফ শক’ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন, যা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ করেছে তারা।
হোয়াইট হাউসের ঘোষণা অনুযায়ী, অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ, ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ, পাকিস্তানের ওপর ১৯ শতাংশ, আফগানিস্তানের ওপর ১৫ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মিয়ানমারের ওপর ৪০ শতাংশ, ফিলিপাইনের ওপর ১৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ওপর ২০ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।
গত ২ এপ্রিল বাণিজ্য ঘাটতির কথা উল্লেখ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর উচ্চহারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন বাংলাদেশের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। পরে ৯ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর ওই শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এ সময় শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন দেশকে আলোচনার সুযোগ দেয় ওয়াশিংটন।
এরই প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক নিয়ে তৃতীয় দফার বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) দপ্তরের সঙ্গে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী এ আলোচনার শেষদিন ছিল আজ। আগের দুই দফা বৈঠকে নানা ইস্যুতে দু’পক্ষের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে পাল্টা শুল্ক কমানোর বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। আজকের আলোচনা শেষে উভয়পক্ষ যৌথভাবে এ বিষয়ে ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশকে বর্তমানের গড় ১৫ শতাংশ ও নতুন পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশ, অর্থাৎ মোট ৩৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করতে হবে।
- এটিআর