Logo

আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলি হামলায় আরও ৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত, ভয়াবহ হয়ে উঠেছে দুর্ভিক্ষ

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৫, ০৯:০০

ইসরায়েলি হামলায় আরও ৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত, ভয়াবহ হয়ে উঠেছে দুর্ভিক্ষ

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে সহায়তা কেন্দ্রে যাওয়ার পথের অসহায় মানুষ ও শিশুরাও। একই সঙ্গে দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি, বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে।

বুধবার (৬ আগস্ট) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ৮৩ জনের মধ্যে ৫৮ জনই সহায়তার আশায় রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সহায়তায় পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হন।

গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদারি জানান, জিএইচএফ-এর কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই এমন ঘটনা বারবার ঘটছে। ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিরা খাবারের আশায় বাইরে বেরিয়ে আসছেন, আর ইসরায়েলি সেনারা গুলি ছুড়ছে।

তিনি আরও জানান, উত্তর গাজার জিকিম ক্রসিংয়ের কাছে একটি বিতরণ কেন্দ্র থেকে আহতদের আল-শিফা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আহতদের অনেকের মাথা, গলা ও বুক লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে, যা চিকিৎসার ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় জটিল।

জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবিক সংস্থা জিএইচএফ-এর কার্যক্রম এবং এর নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংস্থাগুলোর মতে, জিএইচএফ প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে পারছে না এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণে সহায়তা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে খাদ্য সহায়তার লাইনে অপেক্ষমাণ অবস্থায় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৫৬০ ফিলিস্তিনি।

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহার ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন আরও ৮ জন, যাদের একজন শিশু। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে শুধু ক্ষুধা ও অপুষ্টিতেই প্রাণ গেছে অন্তত ১৮৮ জনের, যার অর্ধেকই শিশু।

৭৫ বছর বয়সি সালিম আসফুর বলেন, ‘আমি গত কয়েক মাস ধরে শুধু রুটি আর পানি খেয়ে বেঁচে আছি। ওজন কমে অর্ধেক হয়েছে। রাফাহ থেকে খাবার আনতে ২০ কিলোমিটার হাঁটার মতো শক্তি নেই।’

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানায়, সোমবার গাজায় মাত্র ৯৫টি সহায়তাবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে, অথচ বেঁচে থাকার ন্যূনতম চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন অন্তত ৬০০ ট্রাক প্রয়োজন। বর্তমানে গড়ে ৮৫টি ট্রাক প্রবেশ করছে, যা পর্যাপ্ত নয়।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সহায়তা সরবরাহ সীমিত থাকার পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রেই তা লুট হয়ে যাচ্ছে, যা মানবিক বিপর্যয়কে আরও গভীর করছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি একটি পরিকল্পিত নৈরাজ্য এবং দুর্ভিক্ষ তৈরির অংশ।

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর