৫০ শতাংশ শুল্ক : ভারত থেকে পোশাক কেনা স্থগিত করছে মার্কিন কোম্পানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১৬:২৬

ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর দেশটির তৈরি পোশাক খাত বড় ধরনের সংকটের মুখে পড়েছে। নতুন শুল্কের ফলে মার্কিন ক্রেতাদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে উৎপাদন অন্য দেশে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। ইতোমধ্যে কিছু কোম্পানি অর্ডার স্থগিত করেছে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এসব তথ্য জানিয়েছে।
টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক ব্র্যান্ড গ্যাপ ও কোল’সের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পার্ল গ্লোবাল বলেছে, নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর অনেক ক্লায়েন্ট তাদের কল করছেন। তারা বাড়তি খরচ বহন ও উৎপাদন অন্য দেশে সরিয়ে নেওয়া হবে কি না, তা জানতে চাচ্ছেন।
পার্ল গ্লোবালের কারখানা রয়েছে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম ও গুয়াতেমালায়। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পল্লব ব্যানার্জি রয়টার্সকে বলেন, সব ক্রেতাই ইতোমধ্যেই আমাকে ফোন করছেন। তারা চাচ্ছেন, আমরা যেন ভারতে না থেকে অন্য দেশে উৎপাদন স্থানান্তর করি।
যুক্তরাষ্ট্রের সবশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ভারতের পণ্যের ওপর মোট ৫০ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার থেকে ২৫ শতাংশ কার্যকর হয়েছে। আগামী ২৮ আগস্ট থেকে আরও ২৫ শতাংশ কার্যকর হওয়ার কথা। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানিতে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ এবং চীনের ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে।
রয়টার্স বলছে, কিছু মার্কিন ক্রেতা তাদের অর্ডার স্থগিত রেখেছে। আর কিছু ক্রেতা জোর দিচ্ছে উৎপাদন যেন এমন দেশে সরিয়ে নেওয়া হয় যেখানে শুল্কের হার কম।
ভারত থেকে রিচাকো এক্সপোর্টস চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে ১১৩ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। তাদের ক্লায়েন্টদের মধ্যে আছে জে. ক্রু গ্রুপ। রপ্তানি হওয়া এ পরিমাণ পোশাক ভারতের বিভিন্ন কারখানায় তৈরি হয়।
রিচাকো এক্সপোর্টসের মহাব্যবস্থাপক দিনেশ রহেজা বলেন, এ শিল্পে এখন খরা দেখা দিয়েছে। আমরা নেপালের কাঠমান্ডুতে উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছি।
ভারতের পোশাক প্রস্তুতকারক রেমন্ডের অর্থ বিভাগের প্রধান অমিত আগরওয়াল বলেন, ইথিওপিয়ায় মার্কিন শুল্ক মাত্র ১০ শতাংশ। তাই তারা সেখানকার একটি কারখানায় উৎপাদন বাড়ানোর কথা চিন্তা করছেন। আগামী তিন মাসের মধ্যে এ কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
কটন ব্লসম ইন্ডিয়ার নির্বাহী পরিচালক নবীন মাইকেল জন বলেন, তিরুপপুরের কিছু কারখানাকে ক্রেতারা অর্ডার স্থগিত রাখতে বলেছে। আবার কেউ কেউ ৫০ শতাংশ শুল্ক পুরোপুরি কার্যকর হওয়ার আগেই যতটা সম্ভব পণ্য পাঠিয়ে দিতে চাচ্ছেন।
এমবি