মানবাধিকার প্রতিবেদনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনল ট্রাম্প প্রশাসন

বিবিসি
প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১১:৪২

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের বাৎসরিক মানবাধিকার প্রতিবেদনকে বড় ধরনের পরিবর্তন ও সংক্ষিপ্ত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। আগে বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সবচেয়ে বিস্তারিত সরকারি নথি হিসেবে বিবেচিত এই প্রতিবেদনে এ বছর ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েল ও এল সালভাদরের সমালোচনা কমেছে, কিন্তু ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুহলোর সমালোচনা বেড়েছে।
পূর্বের সংস্করণে থাকা সরকারি দুর্নীতি ও এলজিবিটিকিউ+ ব্যক্তিদের নিপীড়নের মতো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবার বাদ পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিবেদনের কাঠামো নতুনভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে অপ্রয়োজনীয় অংশ বাদ দিয়ে পড়া সহজ হয়।
প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির মতো মিত্র দেশগুলোর অনলাইন ঘৃণামূলক বক্তব্য দমনে নেওয়া পদক্ষেপকে মানবাধিকার পরিস্থিতি ‘অবনতির কারণ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই ভাষা ট্রাম্প প্রশাসনের পূর্ববর্তী সমালোচনার সঙ্গে মিল রেখে চলেছে, যা ইউরোপের অনলাইন নিরাপত্তা আইন নিয়ে মার্কিন প্রযুক্তি খাতের একাংশের আপত্তির প্রতিধ্বনি।
হিউম্যান রাইটস ফার্স্টের প্রধান ও সাবেক কূটনীতিক উজরা জেয়া অভিযোগ করেছেন, এই পরিবর্তন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার অবস্থানকে দুর্বল করবে এবং ‘যদি মিত্র হয় তবে দমননীতিকে উপেক্ষা করা হবে’— এমন বার্তা দেবে।
যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবেদনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় গুরুতর সীমাবদ্ধতার অভিযোগ আনা হলেও লন্ডন তা অস্বীকার করেছে।
ব্রাজিলের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ দমনে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ পদক্ষেপের’ অভিযোগ করা হয়েছে।
ইসরায়েল প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, চলমান যুদ্ধের কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ বেড়েছে, তবে অপরাধীদের চিহ্নিত করার কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ট এবং হামাস নেতা মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার উল্লেখ নেই।
এল সালভাদরের ক্ষেত্রে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের অভিযোগ উপেক্ষা করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গুরুত্বপূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই’। দেশটির প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলেকে সম্প্রতি প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প।
প্রতিবেদনটি কয়েক মাস দেরিতে প্রকাশিত হয়, যার পেছনে পররাষ্ট্র দফতরের ভেতরে অসন্তোষের খবর রয়েছে। এর আগে রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে প্রতিবেদন সংক্ষিপ্ত করার নির্দেশনা এবং দুর্নীতি ও লিঙ্গভিত্তিক অপরাধের মতো ইস্যু বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
সম্প্রতি সৌদি আরব সফরে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আর ‘আপনাদের জীবনযাপন বা শাসনব্যবস্থা নিয়ে বক্তৃতা দেবে না’ এবং ‘পশ্চিমা হস্তক্ষেপ নীতি’ থেকে সরে আসবে।
এইচকে/এমএইচএস