
উত্তর গাজায়, ইসরায়েল-গাজা সীমান্তের কাছে ভবনগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে; ১৩ আগস্ট ২০২৫। ছবি : রয়টার্স
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় একদিনে অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৩ জন ত্রাণ সংগ্রহে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। একই দিনে বেড়ে চলা খাদ্য সংকটের মধ্যে অপুষ্টিতে আরও চারজনের মৃত্যুও নিশ্চিত করেছে তারা।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ইসরায়েলি হামলায় উত্তর গাজার বড় অংশ এখন জনশূন্য ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজা সিটিতে বিমান হামলায় একটি আবাসিক ভবনে ৮ জন এবং তুফাহ এলাকায় আরও ২ জন নিহত হয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা সম্প্রতি গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে লাখো ফিলিস্তিনিকে দক্ষিণ গাজায় গাদাগাদি করে ঠাঁই নিতে বাধ্য করা হবে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল এ উদ্যোগের নিন্দা জানালেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ভেতর থেকেও বিরোধিতার সুর উঠেছে।
বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে রয়েছেন ওয়ালা সুবহ, যিনি যুদ্ধ শুরুর পর উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়া থেকে গাজা সিটিতে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তার ভাষায়, ‘আমরা কোথাও যেতে পারি না, আয়ও নেই—আমি একজন বিধবা। যদি আমাদের সরিয়ে দেয়, অন্তত থাকার জায়গা দিক, তাঁবু দিক, বিশেষ করে বিধবা, শিশু আর অসুস্থদের জন্য।’
অন্যদিকে উম সাজেদ হামদান, পাঁচ সন্তানের মা ও বন্দি স্বামীর স্ত্রী, জানিয়েছেন তিনি শহর ছাড়বেন না। ‘এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় সন্তানদের নিয়ে পালানো সম্ভব নয়। আল-মাওয়াসিতে যাওয়ার চেয়ে গাজা সিটিতেই মৃত্যুর মুখোমুখি হতে রাজি।’
আল জাজিরার রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনাকে ‘ভয়াবহ উসকানি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, নেতানিয়াহু আসলেই গাজা পুনর্দখলের পথে হাঁটছেন।
দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমাসরি সতর্ক করে বলেন, ‘এদের কেউ ১০ বার, কেউ ২০ বার পর্যন্ত বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ২২ মাস ধরে বোমা এড়িয়ে বেঁচে আছেন, এখন অনাহারে ভুগছেন। গাজা খালি করার এ পরিকল্পনা মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে।’
এমএইচএস