Logo

আন্তর্জাতিক

ভালো স্বামী বানাতে সেনেগালে ব্যতিক্রমধর্মী স্কুল

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৪৭

ভালো স্বামী বানাতে সেনেগালে ব্যতিক্রমধর্মী স্কুল

জাতিসংঘের উদ্যোগে আফ্রিকার দেশ সেনেগালে চালু হয়েছে একটি ব্যতিক্রমধর্মী শিক্ষা কার্যক্রম— ‘স্কুল ফর হাজবেন্ডস’। এখানে পুরুষদের শেখানো হচ্ছে কীভাবে তারা সহানুভূতিশীল ও দায়িত্বশীল স্বামী হতে পারেন।

এ স্কুলে ইব্রাহীম ডায়ানে নামের একজন ইমাম ১৪ জন পুরুষের সামনে হাদিস থেকে বাণী তুলে ধরে বলেন, ‘যে পুরুষ স্ত্রী ও সন্তানদের সহায়তা করে না, সে ভালো মুসলিম নন।’ তিনি নিজের সন্তানের গোসল করানো ও স্ত্রীর গৃহকর্মে সহায়তার অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেন।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে গৃহস্থালির বড় সিদ্ধান্ত সাধারণত পুরুষেরাই নেন। পরিবার পরিকল্পনা, গর্ভকালীন চিকিৎসা কিংবা প্রসবকালীন যত্নের ক্ষেত্রেও নারীদের স্বামীর অনুমতির প্রয়োজন হয়। এ বাস্তবতায় স্বামীদের জন্য স্কুলটি পারিবারিক ও স্বাস্থ্য সচেতন আচরণে পুরুষদের উৎসাহিত করছে।

প্রশিক্ষণ নিয়ে ইমাম ইব্রাহীম ডায়ানে জুমার খুতবায় লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, এইচআইভি সংক্রান্ত কুসংস্কার ও প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়েও আলোচনা করেন। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে সমাজে।

নারীরা জানাচ্ছেন, এ উদ্যোগের পর তাদের স্বামীদের আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। শুধু তাই নয়, তাদের ভালো স্বামী বা ভালো বাবা হতে অনুপ্রাণিত করেছে। 

হাবিব ডিয়ালো নামের ৬০ বছর বয়সী এক পুরুষ জানান, ইমামের খুতবা ও জাতিসংঘের কর্মসূচি তাকে সচেতন করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের বউ যখন অন্তঃসত্ত্বা ছিল, তখন আমি তাদের হাসপাতালে ডেলিভারি করাতে উৎসাহিত করি। যদিও প্রথমে আমার ছেলে কিছুটা আপত্তি করেছিল। হাসপাতালে খরচ কেমন হবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল সে। কিন্তু আমি যখন তাকে বুঝিয়ে বলি যে এটা তার স্ত্রী ও সন্তানের জন্য কতটা জরুরি। তখন সে বুঝতে পারে এবং রাজি হয়।’

৫২ বছর বয়সী খারি নডেই বলেন, ‘আগে আমার স্বামী শুধু আদেশ করত। এখন রান্না করে। ঘরের কাজে সাহায্য করে।’

২০১১ সালে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি এখন সেনেগালের নারী, পরিবার, লিঙ্গ ও শিশু সুরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে। তারা এটিকে মাতৃ ও নবজাতক মৃত্যুহার কমানোর কার্যকর কৌশল হিসেবে দেখছে।

ইতিমধ্যে স্বামীদের স্কুল ২০টির বেশি কেন্দ্রে চালু হয়েছে। ৩০০ জনের বেশি পুরুষ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা পিয়ার এডুকেটর হিসেবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আলোচনা করেন।

জাতিসংঘের লক্ষ্যানুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি ১ লাখ জীবিত জন্মে ৭০-এ নামিয়ে আনা এবং নবজাতক মৃত্যুহার প্রতি ১ হাজারে ১২-র নিচে নামানো। ২০২৩ সালে সেনেগালে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ২৩৭ এবং নবজাতক মৃত্যুহার ছিল ২১।

এমবি 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর