Logo

আন্তর্জাতিক

পুতিন-জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠক আয়োজনে কাজ শুরু করেছি : ট্রাম্প

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৯:২১

পুতিন-জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠক আয়োজনে কাজ শুরু করেছি : ট্রাম্প

ছবি : সংগৃহীত

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে দিনভর হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

টানা কয়েক ঘণ্টা কয়েক দফা বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠক আয়োজনে কাজ শুরু করেছেন তিনি।

নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি টেলিফোনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন। হোয়াইট হাউসে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক চলার মধ্যেই পুতিনকে ফোন করেন তিনি।

তবে কবে, কোথায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, সেই বিষয়ে কিছু জানাননি ট্রাম্প। তিনি লিখেছেন, ‘ওই বৈঠকের পর আমাদের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে। সেখানে দুই প্রেসিডেন্টের (পুতিন ও জেলেনস্কি) আমি থাকব। আবারও বলছি, প্রায় চার বছর ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধের জন্য এটি একটি খুব ভালো ও  প্রাথমিক পদক্ষেপ।’

ট্রাম্প আরও লিখেন, আজকের বৈঠকগুলোতে মূল আলোচনার বিষয় ছিল ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়া। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এ নিশ্চয়তা দেবে, যার সমন্বয় করবে যুক্তরাষ্ট্র।

‘রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনায় সবাই খুব খুশি’ বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে গত শুক্রবার আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের তিন দিনের মাথায় সোমবার হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প।

বৈঠকে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটে উপস্থিত ছিলেন।

এ বৈঠকের মাঝপথে পুতিনকে ফোন করেন ট্রাম্প। এ সময় তাদের মধ্যে ৪০ মিনিট কথা হয়ে বলে পুতিনের একজন সহকারী জানিয়েছেন।

এদিকে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠক শেষে জার্মানির চ্যান্সেলর মের্ৎস বলেছেন, ট্রাম্প আজ পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তিনি জানিয়েছেন যে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দুই সপ্তাহের মধ্যে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছেন। তিনি জানান, ওই বৈঠক কোথায় হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে দ্বিপক্ষীয় ওই বৈঠকের পর ট্রাম্পকে নিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে।

বৈঠক শেষে হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও। তিনি ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আজকের বৈঠক এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো বৈঠক হয়েছে।

জেলেনস্কি বলেন, তিনি ট্রাম্পকে যুদ্ধক্ষেত্রের মানচিত্র দেখিয়েছেন এবং কে কোন এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে তা ব্যাখ্যা করেছেন।

পুতিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, ‘পুতিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য আমরা প্রস্তুত।’

হোয়াইট হাউসে সোমবারের আলোচনা বিষয়বস্তু তুলে ধরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ই আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল। যুদ্ধ বন্ধের জন্য এটা প্রয়োজনীয় ‘সূচনা বিন্দু’ হবে।

যেসব দেশ ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেবে, তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে বলে জানান জেলেনস্কি।

‘বাস্তববাদী শান্তিপ্রতিষ্ঠাকারী’
হোয়াইট হাউসে বৈঠকের পর ফক্স নিউজের সঙ্গে কথা বলেন ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটে। সোমবারের বৈঠকে ‘খুবই সফল’ হিসেবে বর্ণনা করে ট্রাম্পকে একজন ‘বাস্তববাদী শান্তিপ্রতিষ্ঠাকারী’ বলেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্টকে নিয়ে রুটে বলেন, ‘তিনি চাপ প্রয়োগ করছেন। একইসঙ্গে তিনি এর সমাধানের পথগুলো খুঁজছেন।’

পুতিনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল উল্লেখ করে ন্যাটোর মহাসচিব বলেন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য তারা কাজ করছেন।

সোমবারের আলোচনার কেন্দ্রে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, নেতারা আগামী কয়েক দিন এসব পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করবেন।

ইউক্রেনে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী চান মাখো
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখো সাংবাদিকদের বলেছেন, ভবিষ্যতে ইউক্রেনে ইউরোপীয় সামরিক বাহিনীগুলোর শান্তিরক্ষায় অংশ নেওয়া উচিত হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের একটি শক্তিশালী ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী পেতে হবে এবং সেখানে সেনা সদস্য পাঠিয়ে ইউক্রেনকে সহায়তা করার প্রয়োজন হবে। আমাদের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম দরকার হবে, যা ইউক্রেনের মিত্ররা দিতে রাজি রয়েছে।’

মাখো এবারই প্রথম একথা বলেননি। কিন্তু এখনো তিনি ইউক্রেনে সেনা পাঠাননি।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট একথাও বলেছেন যে, রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে এগিয়ে না এলে ট্রাম্প মস্কোর সঙ্গে ব্যবসা করা দেশগুলোর ওপরও নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপের দিকে যাবেন। এ প্রসঙ্গে রাশিয়ার তেল কেনায় ভারতের ওপর ইতিমধ্যে ট্রাম্পের বাড়তি শুল্ক আরোপের কথা উল্লেখ করেন তিনি।

  • এমআই

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর