মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে ৭ হাজার ১০০ রোহিঙ্গা নিহত : জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:০৫
-68b90fef5d873.png)
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে (২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি) অন্তত ৭ হাজার ১০০ জন রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যা করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। নিহতদের এক-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাখাইন (আরাকান) রাজ্যে পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এটি ২০১৭ সালের ভয়াবহ গণহত্যার ইতিহাস নতুন করে মনে করিয়ে দিচ্ছে। হত্যা, নির্যাতন, গ্রাম পোড়ানো এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির ঘটনা বেড়েই চলেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক কারণে কমপক্ষে ২৯ হাজার ৫৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২২ হাজারের বেশি এখনো কারাগারে আটক রয়েছেন। সামরিক নিয়ন্ত্রিত আদালতে তাঁদের ন্যায্য বিচারের কোনো নিশ্চয়তাই নেই।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, রাখাইনে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় লাখো মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে। শুধু ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। আগে থেকেই প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফোল্কার টার্ক বলেন, ‘রোহিঙ্গা ও রাখাইন- উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ এখনো সেনাদের নির্বিচার হামলার শিকার। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, গুম, নির্বিচার গ্রেপ্তার, গ্রাম পোড়ানো- এসব ভয়াবহতা আবারো ঘটছে। ২০১৭ সালের হত্যাযজ্ঞের যে ভিডিও আর ছবি আমরা দেখেছিলাম, আজও সেই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।’
টার্ক আরও বলেন, সেনারা প্রায় সম্পূর্ণভাবে দায়মুক্তি ভোগ করছে। ফলে সাধারণ মানুষ ক্রমাগত ভয়াবহ সহিংসতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
জাতিসংঘ কর্মকর্তা ফোল্কার টার্ক জোর দিয়ে বলেন, ‘মিয়ানমারের পুরো পরিস্থিতি অবিলম্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠাতে হবে। এখনই সময় এই অবান্তর সহিংসতার ইতি টানার।’
তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তার ওপর জোর দেন। তার মতে, বছরের পর বছর সহিংসতা, ক্ষুধা ও বাস্তুচ্যুতির শিকার মানুষদের অবিলম্বে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া দরকার। এর জন্য তহবিল বাড়াতে হবে। পাশাপাশি সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে চাপ সৃষ্টি করে মিয়ানমারের সেনা কর্তৃপক্ষকে মানবিক সহায়তার পথ খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সূত্র : আল জাজিরা
আইএইচ/