নেপালে সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ১৪, কারফিউয়ের মেয়াদ বাড়ল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:০৭
---2025-09-08T190619-68bed514307fd.jpg)
ছবি : সংগৃহীত
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে কারফিউয়ের আওতা বাড়ানো হয়েছে। রাজধানীতে নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) নিরাপত্তা বাহিনী ও জেন-জি বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনার পর সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
কারফিউ জারি করেছেন কাঠমান্ডুর প্রধান জেলা কর্মকর্তা (চিফ ডিস্ট্রিক্ট অফিসার) ছবিলাল রিজাল। তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আজ দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কারফিউ কার্যকর থাকবে।
প্রথমে কাঠমান্ডুর বানেশ্বর এলাকার কিছু অংশে কারফিউ জারি করা হয়েছিল। কারণ, আন্দোলনকারীরা সেখানে সুরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। পরে প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন শীতল নিবাস, মহারাজগঞ্জ, ভাইস প্রেসিডেন্টের বাসভবন লায়নচাওর, সিংহ দরবারের চারপাশ, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন বলুয়াটার এবং আশপাশ এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়।
কারফিউ চলাকালে উল্লিখিত এলাকায় চলাফেরা, সমাবেশ, বিক্ষোভ বা ঘেরাও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সংঘাত এড়াতে নাগরিকদের ঘরে অবস্থান এবং কারফিউ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষ বলেছে, বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই কারফিউয়ের আওতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে ফেসবুক, ইউটিউব এবং ইনস্টাগ্রামসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অ্যাপ বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। সরকার বলেছে, নেপালের নিয়ম মেনে এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অ্যাপকে নিবন্ধন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিষ্ঠানগুলো তা করেনি।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিকটক, ভাইভার ও আরও তিনটি প্ল্যাটফর্ম নেপাল সরকারের নির্দেশ মেনে নিবন্ধন করেছে। বর্তমানে সেগুলো দেশটিতে সক্রিয় রয়েছে।
কিন্তু ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো জনপ্রিয় অ্যাপগুলো বন্ধ থাকায় আজ সোমবার রাজধানী কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের অগ্রভাগে জেন-জিসহ তরুণদের দেখা যায়। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন।
বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ আগেই ব্যারিকেড বসিয়েছিল। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তা ভেঙে ফেলেন। এ সময় পুলিশ জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ব্যবহার করে। বিক্ষোভকারীরা গাছের ডাল ও পানির বোতল ছুড়ে স্লোগান দেন। অনেকে পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়েন। এ সময় পুলিশের গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
বিক্ষোভকারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্তের পাশাপাশি সরকারের দুর্নীতির সমালোচনা করেন। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ না করে দুর্নীতি বন্ধের দাবি জানান।
দ্য কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংঘর্ষে স্থানীয় সময় আজ বিকেল ৪টা পর্যন্ত অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন। অনেকে আহত হয়েছেন, তবে তাদের সংখ্যা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আহত অন্তত ১০ জনের অবস্থা গুরুতর।
সূত্র : দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট
- এমআই