নেপালের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান হচ্ছেন সাবেক বিচারপতি সুশীলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:০৬

নেপালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। তিনি নেপালের সুপ্রিম কোর্টের প্রথম এবং একমাত্র নারী প্রধান বিচারপতি ছিলেন। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) কাঠমাণ্ডু থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে।
সুশীলা কার্কি দেশটির অন্তর্বর্তী নেতা হওয়ার জন্য ‘জেন জি’ বিক্ষোভকারীদের প্রথম পছন্দ হিসেবে আলোচনায় এসেছেন।
জেন জি আন্দোলনের এক প্রতিনিধির বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগডেল বুধবার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ সময় তিনি জেন জি নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করেন। তবে আন্দোলনকারীদের সংগঠন ও কাঠামো নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিন কোটি মানুষের হিমালয়ের এ দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। গত মঙ্গলবারের সহিংসতায় দুই দশকের মধ্যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সংসদ ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা নেতা রক্ষা বাম বলেন, ‘এ মুহূর্তে সুশীলা কার্কির নামই অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আসার জন্য আলোচনায় আছে। আমরা এখন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।’
তিনি আরও জানান, সেনাপ্রধানের সঙ্গে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়েছে— কীভাবে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দেশকে এগিয়ে নেওয়া যায়, তা নিয়েই মূলত কথা হয়েছে।
৭৩ বছর বয়সী সুশীলা কার্কি নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী সুপ্রিম কোর্ট প্রধান বিচারপতি। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘সংসদ এখনও বহাল আছে। এখন বিশেষজ্ঞদের একত্রিত হয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে বের করা দরকার।’
তবে আন্দোলনকারীদের এই প্রস্তাব সর্বসম্মত নয় বলে সতর্ক করেছেন অন্যরা। ডিসকোর্ড অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল আলোচনায় হাজারো তরুণ ভিন্ন ভিন্ন প্রস্তাব ও যুক্তি তুলে ধরেছেন।
সাংবাদিক প্রণয় রানা মন্তব্য করেন, ‘এখানে বিভাজন আছে। এমন বিকেন্দ্রীভূত আন্দোলনে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বার্থ ও ভিন্নমত থাকাই স্বাভাবিক।’
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো সেনারা রাজধানীর রাস্তায় টহল দিয়েছে। শহরে আপাত শান্তি বিরাজ করলেও বিভিন্ন জায়গায় সেনা চৌকি বসানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার কাঠমাণ্ডুতে সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধকরণ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। দ্রুত তা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর প্রাণঘাতী দমন অভিযানে অন্তত ১৯ জন নিহত হন।
এমএইচএস