Logo

আন্তর্জাতিক

আসামে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, বাংলাদেশি ৫ ছাত্র বহিষ্কার

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৫

আসামে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, বাংলাদেশি ৫ ছাত্র বহিষ্কার

ছবি : সংগৃহীত

ভারতের আসামে ছাত্র সংঘর্ষে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ৫ বাংলাদেশের ছাত্রকে বহিষ্কার করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ঘটনা আসাম রাজ্যের শিলচর শহরের নামজাদা ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি’ কলেজের। শাস্তির অংশ হিসেবে গত ১২ সেপ্টেম্বর তাদের হোস্টেল থেকেও বহিষ্কার করা হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে দ্রুতই তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে।

এনআইটি সূত্রে জানা যায়, গত ৯ সেপ্টেম্বর এই হামলার ঘটনা ঘটে। যেখানে বাংলাদেশ থেকে এনআইটিতে অধ্যায়ন করতে আসা তৃতীয় বর্ষের একদল ছাত্র তাদেরই দেশের ফাইনাল বর্ষের আরেকদল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ ছিল।

উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম প্রিমিয়াম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আসামের এনআইটি’র ডিরেক্টর অধ্যাপক দিলীপ কুমার বৈদ্য এই ব্যাপারে বলেন ‘আমরা বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করেছি এবং অবশেষে পাঁচজন প্রধান অভিযুক্তকে একটি শিক্ষাবর্ষের জন্য বরখাস্ত করেছি। ওই পাঁচ শিক্ষার্থী যে ক্যাম্পাসের ভেতর সহিংসতার ঘটনায় সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল, আমাদের কাছে তার পর্যাপ্ত প্রমাণ আছে। এই ঘটনায় তাদের দুটি সেমিস্টারের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। যেহেতু এই সময়কালে তাদের ক্লাসে যোগদানের অনুমতি নেই, তাই শীঘ্রই পাঁচজনকেই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে।’

কলেজ কর্তৃপক্ষ সূত্র থেকে থাকা যায়, এই পাঁচজন শিক্ষার্থীর সকলেই ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস’ (আইসিসিআর) স্কলারশিপের অধীনে আসামের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যয়নরত ছিল। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিমত, ওইদিন রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ এই হামলার ঘটনা ঘটে। হোস্টেলের ২০৬ নাম্বার ঘরে বাংলাদেশের পাঁচজন শিক্ষার্থী মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের বাংলাদেশি সহপাঠীদের ওপর আক্রমণ করে। আক্রমণকারী ছাত্ররা লোহার রড, ছুরি এবং স্ক্রু ড্রাইভার নিয়ে চূড়ান্ত বর্ষের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর প্রায় ৩০ মিনিট ধরে আক্রমণ চালায়।

এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। এদের মধ্যে অন্তত দুজন ছাত্রের অবস্থা ছিল গুরুতর। পরে আহত ছাত্রদের নিয়ে যাওয়া হয় শিলচর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (এসএমসিএইচ)। সহপাঠীদের মতে, তাদের মধ্যে দুজনের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে, রক্তক্ষরণ হয়, ফলে তাদের মাথায় সেলাই করতে হয়। 

একজন প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্র বলেন, ‘অভিযুক্তরা প্রথমে তাদের নিজস্ব ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। যখন সিনিয়র শিক্ষার্থীরা তাতে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করে, আক্রমণকারীরা তাদের আলোচনার জন্য একটি ক্লাস রুমে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর হঠাৎ আলো নিভিয়ে দেয় এবং অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর আক্রমণ শুরু করে।’

এই হামলার ঘটনার পরেই তদন্তে নামে এনআইটি কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত এক ছাত্রের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় মাদকদ্রব্য। আরেক ছাত্রের ঘর থেকে উদ্ধার হয় চুরি এবং লোহার রড। তবে এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনো এফআইআর দায়ের করা হয়নি। 

এনআইটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তারা তাদের মতো করে তদন্ত করেছে। গুয়াহাটি জোনের একজন ঊর্ধ্বতন আইসিসিআর কর্মকর্তাও শনিবার ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন। 

‘স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার’-এর ডিন এস.এস. ধর বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে, ক্যাম্পাসের ভেতরে সহিংসতার জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্তকারী কমিটি খুনের অভিযোগ এবং মাদকদ্রব্য পাওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। 

তিনি আরও জানান ‘আমরা আমাদের তদন্ত এবং গৃহীত শাস্তিমূলক ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট। তাই আমরা পুলিশকে অবহিত করিনি। তাছাড়া ক্যাম্পাস পরিদর্শনকারী গুয়াহাটির আইসিসিআর কর্মকর্তাও আমাদের তদন্ত এবং শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট।’

  • এমআই

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংঘর্ষ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর