গাজায় যুদ্ধ শেষ, নোবেলের জন্য করিনি : ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১০

ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার জন্য এয়ারফোর্স ওয়ানে ওঠার আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজায় ‘যুদ্ধ শেষ হয়েছে’ এবং যুদ্ধবিরতি বহাল থাকবে। যুদ্ধ সমাধানে আমিই ভালো। শান্তির জন্য আমি ভালো। খবর বিবিসি’র।
সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে তার খুবই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তিনি (নেতানিয়াহু) চমৎকার কাজ করেছেন। কিছু বিষয়ে তার সাথে আমার মতপার্থক্য ছিল। সেগুলো দ্রুত সমাধান করা হয়েছে।’
কাতারের প্রশংসা করে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, দেশটির কৃতিত্ব পাওয়া উচিত। ‘আমি মনে করি যেভাবে কাতার আমাদের সহায়তা করেছে তা অসাধারণ।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগে বারবার নোবেল শান্তি পুরস্কারের বিষয়ে তার আগ্রহের প্রকাশ ঘটিয়েছিলেন। ‘গাজায় সংঘাত হলো অষ্টম যুদ্ধ যা আমি সমাধান করেছি। আমি নোবেলের জন্য করিনি। আমি এগুলো করেছি জীবন রক্ষার জন্য।’
এ সময় তিনি জানান যে, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার দ্বন্দ্বের কথা তিনি শুনেছেন।
ওদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি গাজা শান্তি বৈঠকের আয়োজন করছেন। মিশরে এ বৈঠকে যারা যোগ দিবেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁক্র, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেৎস, ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো সানচেজ।
তেলআবিবে জড়ো হচ্ছে মানুষ
দীর্ঘ অপেক্ষার পর জিম্মি থাকা প্রিয়জনকে স্বাগত জানাতে তেলআবিবে জড়ো হতে শুরু করেছে ইসরায়েলিরা। সেখানে বড় পর্দার সামনে অবস্থান নিয়েছেন জিম্মি ও নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা। সেখান থেকেই জিম্মিদের মুক্তির দৃশ্য সরাসরি দেখতে পাবে মানুষ।
কয়েক মাস ধরে এ চত্বরেই নিয়মিত জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে সমাবেশ হয়েছে।
ওদিকে ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ বলেছে, এর আগে জিম্মিরা যে প্রক্রিয়ায় মুক্তি পেয়েছিলেন এবারেও তাই হবে।
জিম্মিদের আইডিএফের হাতে হস্তান্তর করবে রেড ক্রস। পরে তাদের ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় সামরিক ঘাঁটিতে নেওয়া হবে। একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পরিবারের সদস্যরা তাদের অভ্যর্থনা জানাবেন।
জিম্মিদের মধ্যে কারা জীবিত আছে
সোমবারই (১৩ অক্টোবর) ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ৪৮ জিম্মিকে মুক্তি দিবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ২০ জন জীবিত আছে বলে মনে করা হয়।
এরা হলেন- অ্যারিয়েল কুনিও ও তার ভাই ডেভিড কুনিও। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর তারা অপহৃত হয়েছিলেন। পরিবারের কাছে পাঠানো সবশেষ বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা একটা হরর মুভির মধ্যে আছি।’
এভিয়াটার ডেভিড, তাকে নোভা উৎসব থেকে অপহরণ করা হয়েছিল।
গালি ও জিভ বারম্যান- ২৮ বছর বয়সী দুই জমজ ভাই। তাদের কিবুৎয কেফার আজা থেকে অপহরণ করেছিলো হামাস।
ওমরি মিরান। অপহৃত হয়েছিলেন যারা তাদের মধ্যে এখন বেঁচে থাকাদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বয়সী। তার বয়স ৪৮।
বাকী জিম্মিরা হলেন- মাতান আংরেস্ট (২২), মাতান জানগৌকার (২৫), নিমরদ কোহেন (২১), গাই গিলবোয়া ডালাল (২৪), ইয়োসেফ চাইম ওহানা (২৫), এলকানা বহবত (৩৬), আভিনাতান ওর (৩২), এইতান ওর (২৫), বার কুপারশটেইন (২৩), সেগেভ কালফন (২৭) ও রম ব্রাসলাভস্কি (২১)।
ব্লেয়ারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার তথাকথিত বোর্ড অব পিস-এ থাকবেন কি-না তা নিয়ে তিনি এখনো সিদ্ধান্ত নেননি।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি সবসময় টনিকে পছন্দ করি। কিন্তু আমাকে দেখতে হবে যে তিনি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য পছন্দ কি-না।’ ট্রাম্প বলেন, তিনি চান দ্রুত এই বোর্ড গঠিত হোক।
এর আগে রোববার (১২ অক্টোবর) পিএলও’র উপপ্রধান গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্লেয়ারের সঙ্গে বৈঠকের একটি ছবি পোস্ট করেছেন। তিনি বলেন, তার সংগঠন ট্রাম্প, ব্লেয়ার ও অন্যদের সাথে কাজ করার জন্য প্রস্তুত আছে।
এমবি