গাজায় যুদ্ধবিরতির পরও ক্ষুধা পরিস্থিতি ‘বিপর্যয়কর’ : ডব্লিউএইচও
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৫০
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার দুই সপ্তাহ পার হলেও সেখানে ক্ষুধা ও অপুষ্টির পরিস্থিতি এখনো ‘বিপর্যয়কর’ বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি জানিয়েছে, ইসরায়েল মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেওয়ায় খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী পর্যাপ্ত পরিমাণে মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছে না। খবর আল জাজিরার।
ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেন, ‘গাজার অবস্থা এখনো ভয়াবহ। যা ত্রাণ প্রবেশ করছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য। যথেষ্ট খাদ্য না থাকায় ক্ষুধার পরিস্থিতিতে কোনো উন্নতি হয়নি।’
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, তাদের প্রতিদিন দুই হাজার টন ত্রাণ সরবরাহের লক্ষ্য থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রতিদিন মাত্র ৭৫০ টন খাদ্য গাজায় প্রবেশ করছে। ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত মাত্র দুটি প্রবেশপথ খোলা থাকায় ত্রাণ পরিবহন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার অন্তত এক-চতুর্থাংশ জনগণ বর্তমানে অনাহারে ভুগছেন, যার মধ্যে রয়েছেন ১১ হাজার ৫০০ গর্ভবতী নারী। ইউএনএফপিএর উপ–নির্বাহী পরিচালক অ্যান্ড্রু স্যাবারটন জানিয়েছেন, ‘এখন গাজায় জন্ম নেওয়া ৭০ শতাংশ শিশু সময়ের আগেই বা কম ওজন নিয়ে জন্মাচ্ছে— যা এক ভয়াবহ সংকেত।’
অবরুদ্ধ অঞ্চলে খাদ্যাভাবের কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় সংগঠন পিএআরসি জানিয়েছে, বিস্কুট, চকলেট ও কোমল পানীয় ঢুকতে দেওয়া হলেও পুষ্টিকর খাবার যেমন বীজ, জলপাই ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এক কেজি টমেটোর দাম বেড়ে ১৫ শেকেলে পৌঁছেছে, যা প্রায় ৪.৫০ ডলারের সমান।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) অক্সফাম, নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলসহ ৪১টি আন্তর্জাতিক সংস্থা এক যৌথ বিবৃতিতে অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল নির্বিচারে ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোকে গাজায় প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৮ হাজার ২৮০ জন নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৩৭৫ জন আহত হয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধবিরতির পরও গাজার মানবিক সংকট অব্যাহত থাকলে পুরো এক প্রজন্ম মারাত্মক পুষ্টিহীনতার শিকার হবে, যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ হতে পারে।
এমএইচএস


