যুদ্ধবিরতিতেও গাজায় ৭৫ শতাংশই ত্রাণ আটকে রাখছে ইসরায়েল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৪২
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। প্রতিশ্রুত সহায়তার মাত্র এক-চতুর্থাংশ ঢুকতে দিচ্ছে তারা। অর্থাৎ ৭৫ শতাংশ ত্রাণই আটকে রেখেছে ইসরায়েল।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও প্রতিদিন গড়ে মাত্র ১৪৫টি ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছে। যা নির্ধারিত দৈনিক ৬০০ ট্রাকের মাত্র ২৪ শতাংশ বলে জানিয়েছে গাজার কর্তৃপক্ষ।
রোববার (২ নভেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা’র এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, ১০ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ৩ হাজার ২০৩টি বাণিজ্যিক ও ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে মাত্র ১৪৫টি ট্রাক প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে। যা যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে নির্ধারিত দৈনিক ৬০০ ট্রাকের মাত্র ২৪ শতাংশ।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে ত্রাণ ও বাণিজ্যিক পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে বাধা দিচ্ছে। এর ফলে ২৪ লাখেরও বেশি মানুষের মানবিক সংকট ভয়াবহভাবে বেড়েছে। আর এর দায় সম্পূর্ণ ইসরায়েলের।’
এমন অবস্থায় ‘কোনো শর্ত বা বিধিনিষেধ ছাড়াই’ ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিতে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ত্রাণ প্রবাহ কিছুটা বাড়লেও ইসরায়েলি বিধিনিষেধের কারণে গাজার অধিকাংশ মানুষ এখনো খাবার, পানি ও ওষুধসহ মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র সংকটে রয়েছেন।
গত দুই বছরের লাগাতার ইসরায়েলি হামলায় বহু পরিবার এখনো আশ্রয়হীন। ঘরবাড়ি ও পুরো এলাকা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় অনেকেই এখন খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন।
আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজজুম জানিয়েছেন, খান ইউনিসে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান- ‘ইসরায়েলি ড্রোন আর ভারী গোলাবর্ষণে ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, আকাশে ড্রোনের অব্যাহত উপস্থিতি ও বোমাবর্ষণের কারণে গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছাতে পারছে না।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৫৯৪ জন আহত হয়েছেন।
এমবি

