ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে শক্তিশালী টাইফুন ‘কালমেগি’র আঘাতে কমপক্ষে ৫২ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির অন্যতম জনবহুল দ্বীপ সেবুতে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। ঝড়ের তাণ্ডবে লাখ লাখ মানুষকে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে হয়েছে। খবর বিবিসি’র।
স্থানীয়ভাবে ‘তিনো’ নামে পরিচিত এ টাইফুন মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ভোরে আঘাত হানে। এতে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে সেবুসহ আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষ ঘরের ছাদে আশ্রয় নিচ্ছে, আর সড়কজুড়ে ভেসে যাচ্ছে গাড়ি ও শিপিং কনটেইনার।
টাইফুন ‘কালমেগি’ বেশ অনেকটা এলাকা জুড়ে জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি করেছে। যার মধ্যে রয়েছে মধ্যাঞ্চলের সবচেয়ে জনবহুল দ্বীপ সেবু। এখানেই বেশিরভাগ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে এবং আরও ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষ বাড়ির ছাদের উপর আশ্রয় নিচ্ছে। গাড়ি ও শিপিং কনটেইনার রাস্তা দিয়ে ভেসে যাচ্ছে।
তবে সরকারের ঘোষিত মৃতের সংখ্যায় সেবুর দক্ষিণে মিন্দানাও দ্বীপে ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা করার জন্য মোতায়েন করা একটি সামরিক হেলিকপ্টারের ছয়জন ক্রু সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। হেলিকপ্টারটি মঙ্গলবার আগুসান দেল সুরের কাছে বিধ্বস্ত হয়। এটি সাহায্যে পাঠানো চারটি বিমানের মধ্যে একটি ছিল।
ফিলিপাইন বিমানবাহিনী বলেছে, ‘হেলিকপ্টারটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। যার কারণে অবিলম্বে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান শুরু করতে হয়।’ পরে একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ছয়টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। যাদের পাইলট ও ক্রু বলে মনে করা হচ্ছে।
স্থানীয়ভাবে ‘তিনো’ নামে পরিচিত এ টাইফুনটি মঙ্গলবার ভোরে আঘাত হানার পর থেকে দুর্বল হয়েছে। তবে এটি এখনো ঘণ্টায় ৮০ মাইলেরও বেশি (প্রায় ১৩০ কিমি) বেগে বাতাস নিয়ে আসছে। এটি ভিসায়াস দ্বীপপুঞ্জ অঞ্চল পেরিয়ে বুধবারের মধ্যে দক্ষিণ চীন সাগরে চলে যাবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
প্রাদেশিক গভর্নর পামেলা বারিকুয়াত্রো এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, ‘সেবুর পরিস্থিতি সত্যিই অভূতপূর্ব। আমরা আশা করছিলাম বাতাসটাই বিপজ্জনক হবে। কিন্তু জলোচ্ছ্বাসই আসলে আমাদের মানুষদের বিপদের মুখে ফেলছে। বন্যার পানি কেবলই ধ্বংসাত্মক।’
দুর্যোগ ত্রাণ কার্যক্রম সহজ করার জন্য বারিকুয়াত্রো মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেবুতে ‘স্টেট অব ক্যালামিটি’ বা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
এমবি

