Logo

আন্তর্জাতিক

প্রথম মুসলিম মেয়র পেল নিউইয়র্ক

Icon

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:১৪

প্রথম মুসলিম মেয়র পেল নিউইয়র্ক

নিউইয়র্ক সিটি পেয়েছে ইতিহাসের প্রথম মুসলিম মেয়র। ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট প্রার্থী জোহরান মামদানি জয়ী হয়ে নিউইয়র্কের রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন। ৩৪ বছর বয়সী এই তরুণ রাজনীতিক শুধু প্রথম মুসলিম নন, তিনিই শহরের প্রথম মিলেনিয়াল মেয়র হিসেবেও দায়িত্ব নিচ্ছেন।

গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে শ্রমজীবী মানুষের জন্য লড়াই করা ৩৪ বছরের মামদানি রেকর্ড ব্যবধানে জয় পেয়েছেন। 

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে মামদানি সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো ও রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করে মেয়র এরিক অ্যাডামসের উত্তরসূরি হচ্ছেন। তার এই জয়কে বিশ্লেষকরা সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে চমকপ্রদ রাজনৈতিক উত্থান হিসেবে দেখছেন।

প্রচারণায় মামদানি মূল গুরুত্ব দেন জীবনযাত্রার ব্যয়, বাড়িভাড়া ও গণপরিবহন সংকটের মতো জনজীবনের ইস্যুগুলোতে। তিনি ভাড়া স্থগিত রাখা, সিটি-স্বত্বাধীন মুদি দোকান চালু করা এবং বাসযাত্রা বিনামূল্যে করার প্রতিশ্রুতি দেন। এসব প্রস্তাব তাকে তরুণ ও প্রগতিশীল ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলে।

তবে নির্বাচনে সবচেয়ে আলোচিত ছিল ইসরায়েল-হামাস সংঘাত নিয়ে তার অবস্থান। ‘গ্লোবালাইজ দ্য ইন্তিফাদা’ স্লোগান নিন্দা করতে বিলম্ব করায় তিনি সমালোচনার মুখে পড়েন। যদিও পরে তিনি স্পষ্ট করেন, এই স্লোগান তিনি নিজে ব্যবহার করেননি এবং করবেন না বলেও ঘোষণা দেন। তবু ইসরায়েলবিরোধী মন্তব্যের কারণে বিতর্ক থামেনি। গাজায় ইসরায়েলি হামলাকে তিনি ‘গণহত্যা’ বলে আখ্যায়িত করেন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ওয়ারেন্ট কার্যকর করতে নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের আহ্বান জানান।

মামদানি অতীতে নিউইয়র্ক পুলিশের অর্থায়ন কমানোর আহ্বান জানিয়ে ‘ডিফান্ড দ্য পুলিশ’ আন্দোলনেরও অংশ ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি প্রকাশ্যে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের কাছে ক্ষমা চান।

অন্যদিকে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুয়োমো যৌন হয়রানির অভিযোগ ও কোভিড মহামারির সময় নার্সিং হোমে মৃত্যুহার গোপন করার বিতর্কে জর্জরিত ছিলেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থন পেলেও, গভীর ডেমোক্র্যাটিক ঘাঁটি নিউইয়র্ক সিটিতে তা কোনো প্রভাব ফেলেনি।

নির্বাচনের শেষ দিকে রিপাবলিকান প্রার্থী স্লিওয়া প্রতিযোগিতা থেকে সরে না দাঁড়ানোয় ভোট ভাগ হয়ে যায়, যা শেষ পর্যন্ত মামদানির জন্য সুবিধা এনে দেয়।

নিউইয়র্কের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন এমন এক প্রজন্মের প্রতিনিধি, যিনি শহরের রাজনীতিতে নতুন ভাষা ও দৃষ্টিভঙ্গি আনতে চান। তবে সামনে তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো— নিজের প্রগতিশীল প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা এবং ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করা।

জোহরান মামদানির এই ঐতিহাসিক জয় এখন শুধু নিউইয়র্ক নয়, সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতর নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে— দলটি কি সত্যিই বামঘেঁষা তরুণ রাজনীতিকদের হাতে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তুলে দিতে প্রস্তুত?

কেই/এমএইচএস 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

যুক্তরাষ্ট্র

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর