Logo

আন্তর্জাতিক

শাটডাউনে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় দেড় হাজার ফ্লাইট বাতিল

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১১:১২

শাটডাউনে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় দেড় হাজার ফ্লাইট বাতিল

যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে কিংবা দেশটিতে আসা যাওয়ার জন্য নির্ধারিত ১৪০০র বেশি ফ্লাইট ফেডারেল সরকারের শাটডাউনের কারণে স্থানীয় সময় শনিবারে (৮ নভেম্বর) বাতিল হয়েছে। এ শাটডাউনের কারণে আগেই দেশটিতে বিমান চলাচল কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। খবর বিবিসি’র।

এছাড়া প্রায় ছয় হাজার ফ্লাইটের যাত্রা বিলম্বিত হয়েছে। এর আগে শুক্রবার আরও সাত হাজার ফ্লাইট বিলম্বিত হওয়ার তথ্য দিয়েছে ফ্লাইট ট্রাকার ফ্লাইটঅ্যাওয়ার।

ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) চলতি সপ্তাহের শুরুতেই দেশের ৪০টি ব্যস্ততম বিমানবন্দরে বিমান চলাচলের ক্ষমতা ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমানোর কথা বলেছিলো।

এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার বা বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণকারীরা বেতন ছাড়াই অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে ক্লান্তির কথা জানানোয় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

শাটডাউন গত পহেলা অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে। কিন্তু রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটরা কংগ্রেসে এর সমাধান কীভাবে করা হবে তা নিয়ে এখনো বিভক্ত।

ইতিহাসের দীর্ঘতম এই শাটডাউনের ৩৯তম দিন পার হলো শনিবার। সরকারের কার্যক্রম পুনরায় চালুর জন্য রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটরা তহবিল ছাড়ের বিষয়ে এখনো একমত হতে পারেনি।

দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার জন্য সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও সিনেটররা ওয়াশিংটনেই অবস্থান করছেন, যার লক্ষ্য দ্রুত শাটডাউনের অবসান করা।

ইতোমধ্যে খাদ্য সহায়তা ব্যয়ে কাটছাঁট এবং ফ্লাইট বিশৃঙ্খলার কারণে সাধারণ আমেরিকানদের ওপর এই শাটডাউনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

শনিবার আমেরিকান এয়ারলাইন্স এক বিবৃতিতে শাটডাউন অবসানের জন্য দ্রুত সমাধানে পৌঁছাতে ওয়াশিংটনের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

নিউজার্সির নিউয়ার্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শনিবার দুপুর নাগাদ অপেক্ষার লাইন দীর্ঘতর হচ্ছিলো।

সেখানে আসা ফ্লাইটগুলো গড়ে চার ঘণ্টারও বেশি বিলম্বিত হচ্ছিল, আর বিমানবন্দর ছেড়ে যাওয়া ফ্লাইটগুলো নির্ধারিত সময়ের চেয়ে গড়ে দেড় ঘণ্টা পিছিয়ে ছিল বলে জানিয়েছে এফএএ।

ফ্লাইটঅ্যাওয়ারের তথ্য অনুযায়ী, যেসব বিমানবন্দরে শনিবার সবচেয়ে বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে সেগুলো হলো- শার্লট/ডগলাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, নিউয়ার্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, এবং শিকাগো ও'হেয়ার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

এফএএ জানিয়েছে, শনিবার দুপুর পর্যন্ত জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গড়ে তিন ঘণ্টা, হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন আটলান্টা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আড়াই ঘণ্টারও বেশি, এবং লা গার্ডিয়ায় প্রায় এক ঘণ্টা পর্যন্ত ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে।

দেশটিতে থ্যাঙ্কসগিভিং ছুটি (২৭ নভেম্বর) এগিয়ে আসছে। এ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে ওই সময়কে বছরের সবচেয়ে ব্যস্ত ভ্রমণ মৌসুমগুলোর একটি বলে মনে করা হয়।

ফলে এখনকার শাটডাউনে শুধু যে বাণিজ্যিক ফ্লাইটগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা নয়।

ব্যক্তিগত বিমানের ওপরও বিধিনিষেধ জারির কথা জানিয়ে শনিবার এক্স-এ পোস্ট করেছেন পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি।

‘আমরা ব্যস্ত বিমানবন্দরগুলোতে ব্যক্তিগত জেটের সংখ্যা কমিয়েছি এবং এর পরিবর্তে তাদের ছোট বিমানবন্দর বা এয়ারফিল্ড ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে ব্যস্ত কন্ট্রোলাররা বাণিজ্যিক বিমান চলাচলে মনোযোগ দিতে পারেন। এটাই গ্রহণযােগ্য সমাধান বলে মনে করি আমরা,’ লিখেছেন তিনি।

এদিকে, এফএএ জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে, কারণ সংস্থাটি ধীরে ধীরে ফ্লাইট বাতিলের সংখ্যা বাড়াবে।

বৃহস্পতিবার এফএএ যে ঘোষণা দিয়েছে সে অনুযায়ী ফ্লাইট সংখ্যা ধীরে ধীরে কমানো হবে। 

শুক্রবারে চার শতাংশ কমানোর মধ্য দিয়ে এটি শুরু হয়েছে। এরপর ১৪ নভেম্বর নাগাদ তা দশ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে।

এফএএ বলছে, এই কাঁটছাট বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জরুরি, কারণ এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা শাটডাউনের কারণে অতিরিক্ত কাজের চাপে রয়েছেন।

দেশটির আইন অনুযায়ী, বিমানবন্দরে কর্মরতরা ‘জরুরি কর্মী’ হওয়ায় বেতন ছাড়াই কাজ করতে বাধ্য। যেকারণে এখন অনেকে অসুস্থতার কথা বলে ছুটি নিচ্ছেন।

এই ফ্লাইট কন্ট্রোলাররা দেশটির ১৪ লাখ ফেডারেল কর্মচারীর অংশ, যাদের অনেকেই হয় বেতন ছাড়া কাজ করছেন, অথবা জোরপূর্বক ছুটিতে রয়েছেন।

এছাড়া ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি এজেন্সির (টিসিএ) ৬৪ হাজার কর্মীও শাটডাউনের কারণে বেতন পাচ্ছেন না, যা বিমান চলাচলে সরাসরি প্রভাব ফেলছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগের মেয়াদের সময়ে ২০১৮ সালের শাটডাউনের সময় প্রায় ১০ শতাংশ টিসিএ কর্মী বিনা বেতনে কাজ না করে বরং বাড়িতে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

এমবি 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

যুক্তরাষ্ট্র

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর