গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২৮
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:১৩
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত মাসে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলায় বুধবার অন্তত ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭৭ জন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর-আল জাজিরা
আল জাজিরার গাজা সিটি প্রতিনিধি হানি মাহমুদ জানান, হামলা তিনটি নির্দিষ্ট স্থানে চালানো হয়— দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস সংলগ্ন আল-মাওয়াসি এলাকা, গাজা সিটির শুজাইয়া অঞ্চল এবং জেইতুন পাড়া।
জেইতুন এলাকায় বাস্তুচ্যুত মানুষ থাকা একটি ভবনে হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হন, তাদের মধ্যে পুরো একটি পরিবার— বাবা-মা ও তিন শিশু ছিলেন। শুজাইয়া এলাকার একটি ব্যস্ত মোড়েও হামলা চালানো হয়; যেখানে বহু বাস্তুচ্যুত পরিবার ছিল।
হানি মাহমুদ বলেন, হামলাগুলো যুদ্ধবিরতির পরও গাজাবাসীর ভয়ের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। “যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও বোমাবর্ষণ ও গোলার শব্দ প্রতিদিন শোনা যাচ্ছে। মানুষ প্রতিনিয়ত মৃত্যুর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।”
ইসরায়েল দাবি করেছে, খান ইউনিসে তাদের সেনাদের ওপর গুলি চালানোর পর তারা ‘হামাস টার্গেট’ লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালায়। তবে হামাস এই দাবি ভিত্তিহীন বলে প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাদের ভাষায়, ‘এটি গণহত্যা চালানোর নতুন অজুহাত।’
পশ্চিম তীরের রামাল্লাহ থেকে আল জাজিরার নূর ওদেহ বলেন, যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়নে ইসরায়েল নিজেকে ‘বিচারক, জুরি ও মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকারী’ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। ‘তারা নিজেরাই ঠিক করছে হামাস যুদ্ধবিরতি মানছে কি না, আর সেই দাবি দেখিয়েই নতুন হামলা চালাচ্ছে।’
একই দিনে লেবাননেও ইসরায়েলের হামলা নতুনভাবে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। এর ঠিক আগেই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত একটি প্রস্তাব পাস করেছে, যেখানে গাজায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী এবং ‘বোর্ড অব পিস’ গঠনের কথা বলা হয়েছে। তবে গাজার নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে ইসরায়েলের অনীহা ও হামাসের আপত্তি এই পরিকল্পনাকে বিতর্কিত করেছে।
হিউম্যান রাইটস সংগঠন আল-হাক সতর্ক করেছে, এই প্রস্তাব ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ক্ষুণ্ণ করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কুইন্সি ইনস্টিটিউটের গবেষক খালেদ এলগিন্ডি বলেন, ইসরায়েলের হামলা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে বড় পরীক্ষা তৈরি করেছে।
‘যদি যুক্তরাষ্ট্র ও নিরাপত্তা পরিষদ এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখতে না পারে, তাহলে নামমাত্র যুদ্ধবিরতির আড়ালে আগের মতোই যুদ্ধ চলবে,’ তিনি বলেন।
আল জাজিরার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১০ অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির শর্ত অন্তত ৩৯৩ বার লঙ্ঘন করেছে।
এমএইচএস

