Logo

আন্তর্জাতিক

চেরনোবিলের ধ্বংসস্তূপের রহস্য উদঘাটন

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৮

চেরনোবিলের ধ্বংসস্তূপের রহস্য উদঘাটন

চেরনোবিলের ভয়াবহ পারমাণবিক বিস্ফোরণের পর যে এলাকায় জীবিত কিছু থাকার কথা ছিল না, ঠিক সেখানেই মিলেছে আশ্চর্য এক প্রাণ- কালো রঙের বিশেষ ছত্রাক। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ছত্রাক শুধু রেডিয়েশনে টিকে থাকে না, বরং রেডিয়েশনই যেন তাদের বৃদ্ধি বাড়ায়। ১৯৯৭ সালে ইউক্রেনের বিজ্ঞানী নেল্লি ঝদানোভা চেরনোবিলের বিধ্বস্ত রিয়্যাক্টরে গবেষণা করতে গিয়ে প্রথম এই ছত্রাক খুঁজে পান। দেয়াল, ছাদ আর লোহার পাইপে ছত্রাকগুলো তখনো বেড়ে চলেছে। পরে পরীক্ষা করে দেখা যায়, এই ছত্রাক রেডিয়েশনের দিকেই বাড়ে। এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় রেডিওট্রপিজম (রেডিয়েশনের দিকে বৃদ্ধি)।

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, চেরনোবিল এলাকায় প্রায় ৩৬টি সাধারণ ছত্রাক প্রজাতিও রেডিয়েশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। এর মূল কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা চিহ্নিত করেছেন মেলানিন, যে রঞ্জক আমাদের ত্বক বা চুলকেও কালো করে। ছত্রাকের কোষে মেলানিন বেশি থাকায় তা রেডিয়েশন শোষণ করে শক্তি ছড়িয়ে দেয় এবং কোষকে সুরক্ষা দেয়। এমনকি চেরনোবিলের হ্রদের ব্যাঙদের গায়েও সময়ের সঙ্গে মেলানিন বেড়েছে, ফলে তারা রেডিয়েশনে বেশি টিকে থাকতে পারে।

২০০৭ সালে গবেষক একাতেরিনা দাদাচোভা দেখান, রেডিওএকটিভ সিজিয়াম (এক ধরনের তেজষ্ক্রিয় উপাদান) দিলে মেলানিনযুক্ত ছত্রাক ১০ শতাংশ বেশি দ্রুত বাড়ে। ধারণা করা হয়, ছত্রাকগুলো রেডিয়েশনকে শক্তিতে রূপান্তর করতে পারে। এ প্রক্রিয়ার সম্ভাব্য নাম রেডিওসিনথেসিস (রেডিয়েশন থেকে শক্তি গ্রহণ)।

২০১৮ সালে চেরনোবিলের একই প্রজাতির এক ছত্রাক Cladosporium sphaerospermum আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পাঠানো হয়। সেখানেও এটি মারাত্মক কসমিক রেডিয়েশন সহ্য করে বেড়ে ওঠে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আবিষ্কার ভবিষ্যতে মহাকাশে নভোচারীদের রেডিয়েশন থেকে রক্ষা করতে নতুন প্রযুক্তি তৈরি করতে সহায়তা করতে পারে। পাশাপাশি তেজষ্ক্রিয় দূষণ পরিষ্কারেও রেডিয়েশন ক্লিনআপ ছত্রাক বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

বিকেপি/এমএইচএস 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

প্রযুক্তি

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর