ঘূর্ণিঝড় দিতওয়ারে শ্রীলঙ্কায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪১০, নিখোঁজ ৩৩৬
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪৪
শুক্রবার দ্বীপদেশটির ওপর দিয়ে বয়ে যায় ঘূর্ণিঝড় দিতওয়ার। ছবি : সংগৃহীত
শ্রীলঙ্কায় প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড় দিতওয়ার বয়ে আনা ভারি বৃষ্টিতে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৪১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও ৩৩৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। খবর- রয়টার্স।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) শ্রীলঙ্কার মধ্যাঞ্চলের ক্যান্ডি অঞ্চলের আলওয়াতুগোদা গ্রামে বাসিন্দা নওয়াজ নাশরা জানান, তিনি নিজেকে এবং তিন বছর বয়সী কন্যাকে দুর্যোগের মধ্যে ঘর থেকে উদ্ধার করেছেন। তিনি কন্যাকে বিছানার একটি চাদর দিয়ে মুড়ে পাহাড়ের ঢাল দিয়ে দৌড়ে নিচে নামেন এবং পরে একটি মসজিদে আশ্রয় নেন। নাশরা বলেন, ‘ঘুটঘুটে অন্ধকার, বজ্রপাতের মতো শব্দ এবং পাশের বাড়ি ভেঙে পড়ার দৃশ্য চোখের সামনে ঘটেছিল। কাউকে সতর্ক করার সময় ছিল না।’
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকালে দ্বীপদেশটির ওপর দিয়ে বয়ে যায় এই ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় দিতওয়ার।
ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে আলওয়াতুগোদা গ্রামে ৮৮ জন নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত ২০০ জন। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্যান্ডি অঞ্চলের ২০ হাজারেরও বেশি মানুষকে ১৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া টানা বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিধস ও রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। যে সব এলাকায় ভূমিধস হয়েছে, সেখানে মৃতদেহ উদ্ধার করতে শত শত সেনা ও পুলিশ সদস্য কাজ করছেন। পাহাড় থেকে ধসে পড়া মাটি, পাথর ও গাছের ভেঙে পড়া ডাল সরাতে বুলডোজার ও অন্যান্য ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুরো দেশজুড়ে ৩৩৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন এবং প্রায় ১২ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। টেলিযোগাযোগ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কাজ শুরু হয়েছে, কারণ ঘূর্ণিঝড়ের সময় প্রবল বাতাসে এসব সরবরাহ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।
দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোতেও সাম্প্রতিক সময়ে প্রাণঘাতী ঝড়ের তাণ্ডব দেখা গেছে। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে এসব ঝড়ে বিশাল এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শত শত মানুষ মারা গেছেন।
এমএইচএস

