হাদিসের শিক্ষা
পবিত্র কোরআন মানুষের জন্য কিয়ামতের দিন সুপারিশকারী হবে
ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫৭
আবু উমামা বাহিলী (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তোমরা কুরআন তিলাওয়াত করবে। কেননা, কিয়ামতের দিন তা তিলাওয়াতকারীদের জন্য সুপারিশকারীরূপে উপস্থিত হবে। সুপারিশকারী দু’টি সমুজ্জ্বল সুরা বাকারা ও আল-ইমরান তিলাওয়াত করবে। কেননা, এ দু’টি কিয়ামতের দিনে এমনভাবে উপস্থিত হবে যেন দু’টি ‘গায়ায়া’ (মেঘখণ্ড) কিংবা দু’টি ডানা বিস্তারকারী পাখির ঝাঁক, যারা তাদের তিলাওয়াতকারীদের পক্ষে সাহায্যকারী হবে। তোমরা সুরা বাকারা তিলাওয়াত করবে। কেননা, তা তিলাওয়াত করাতে বরকত রয়েছে এবং তা বর্জন করা আফসোসের। কারণ, বাতিলপন্থিরা তার সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারবে না। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৭৪৭)
খোদ নবীজিও (সা.) এই দুই সুরা পাঠ করতেন। আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, একবার রাসুল (সা.) তার স্ত্রী মায়মুনা (রা.) এর ঘরে রাত কাটান। তিনি ছিলেন ইবনু আব্বাস (রা.) এর খালা। ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন, এরপর আমি বিছানার চওড়া দিকে শয়ন করলাম এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর স্ত্রী বিছানার লম্বা দিকে শয়ন করলেন। এরপর নবীজি (সা.) ঘুমিয়ে পড়লেন। এমনভাবে রাত যখন অর্ধেক হয়ে গেল বা তার কিছু আগে বা পরে তিনি (নবীজি সা.) জেগে উঠলেন। তারপর তিনি বসে হাত দিয়ে তাঁর মুখমণ্ডল থেকে ঘুমের আবেশ মুছতে লাগলেন। এরপর সুরা আল-ইমরানের শেষ ১০ আয়াত পাঠ করলেন।
হাদিসটিতে আরও উল্লেখ রয়েছে, পরে নবীজি (সা.) দাঁড়িয়ে একটি ঝুলন্ত মশক থেকে সুন্দরভাবে অজু করলেন। তারপর নামাজে দাঁড়িয়ে গেলেন। ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন, পরে আমিও উঠে তিনি যেরূপ করেছিলেন তদ্রুপ করলাম। তারপর গিয়ে তাঁর বাঁ পাশে দাঁড়ালাম। তিনি তাঁর ডান হাত আমার মাথার ওপর রাখলেন এবং আমার ডান কান ধরে একটু নাড়া দিলেন (এবং তাঁর), ডান পাশে এনে দাঁড় করালেন। তারপর তিনি দু’রাকাত সালাত নামাজ আদায় করলেন। এরপর দু’রাকাত করে ১০ রাকাত নামাজ পড়লেন এবং তারপর বিতর আদায় করলেন। এরপর তিনি শুয়ে পড়লেন। তার কিছুক্ষণ পরই তাঁর কাছে মুয়াজ্জিন এলেন। পরে তিনি দাঁড়িয়ে হালকাভাবে দু’রাকাত নামাজ আদায় করলেন। তারপর বেরিয়ে গিয়ে ফজরের নামাজ আদায় করলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৮৩)
শিক্ষা : পবিত্র কোরআন মানুষের জন্য কিয়ামতের দিনে সুপারিশকারী হবে। বিশেষত সূরা বাকারা ও আল–ইমরান নিয়মিত পড়লে আল্লাহর নিকট সুফল পাওয়া যায়।

