-67b316274ebcd.jpg)
মুসলিম হিসেবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক সময়ই ভুল হয়, সেটা হয়তো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়। আমরা এমন অনেক কাজ করি, যেগুলো আল্লাহ আমাদের করতে নিষেধ করেছেন। তবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন খুবই দয়ালু এবং ক্ষমাশীল, তিনি আমাদের সকল ভুল ক্ষমা করতে প্রস্তুত আছেন। তাই আমাদের উচিৎ আল্লাহর কাছে ফিরে আসা,তাওবা করা এবং তার সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা করা।
তাওবা ও তার গুরুত্ব
তাওবা (পাপ থেকে ফিরে আসা) আল্লাহর কাছে ফিরে আসার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তবে যে তাওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, ফলে আল্লাহ তাদের গুণাহসমূহ নেকি দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা ফুরকান, আয়াত : ৭০)
এই আয়াতে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে যে,তাওবা করলে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দার পাপ ক্ষমা করে দেন এবং তাদের পাপকে সৎকর্মে রূপান্তরিত করেন। তাইতাওবা আল্লাহর কাছ থেকে ফিরে আসার পথে এক অনন্য উপায়, যা আমাদের পাপ থেকে মুক্তির পাশাপাশি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম।
এ ছাড়া আল্লাহ তায়ালা অন্য একটি আয়াতে বলেন, ‘তোমরা সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে আল্লাহর কাছেতাওবা করো।’ (সুরা তাহরিম, আয়াত : ৮) এ আয়াতও আমাদেরতাওবার প্রতি গুরুত্ব দেয়, যেন আমাদেরতাওবা সত্য ও আন্তরিক হয়।
আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা
অন্য এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সকল পাপ ক্ষমা করবেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা যুমার, আয়াত : ৩৯) এ আয়াত আমাদের আশ্বস্ত করে যে, আল্লাহ সমস্ত পাপ ক্ষমা করতে সক্ষম এবং তিনি অত্যন্ত দয়ালু।
হাদিসে তাওবার গুরুত্ব
হাদিস শরিফে এসেছে- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘তোমাদের কোনো ব্যক্তি হারানো পশু পাওয়ার কারণে যে পরিমাণ খুশি হয়, তোমাদের কারোর তাওবার কারণে আল্লাহ তায়ালা এর চেয়েও অধিক খুশি হন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৭০১)
অন্য একটি হাদিসে এসেছে- ইসহাক ইবনু মনসুর (রহ.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তার মুমিন বান্দার তাওবার কারণে অধিকতর আনন্দিত হন।, (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৯৫৪) এসব হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দারতাওবার প্রতি খুবই আনন্দিত হন এবং তা কবুল করেন, এমনকি পাপ বারবার ঘটলেও তাওবা করে আল্লাহর কাছে ফিরে আসার মাধ্যমে তা মাফ হয়ে যায়।
তাওবা শুধুমাত্র আমাদের পাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার মাধ্যম নয়; বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনেরও এক পথ। আল্লাহ আমাদের প্রতি পরম দয়ালু এবং তার কাছে ফিরে যাওয়ার পথ সর্বদা উন্মুক্ত থাকে তাওবার মাধ্যমে। আমরা যতই ভুল করি না কেন, আল্লাহ আমাদেরতাওবা গ্রহণ করেন এবং আমাদের পাপগুলোকে সৎকর্মে রূপান্তরিত করেন। পাপ মোচনের মহৌষধ হচ্ছে তাওবা। তাওবার দ্বারা মুমিন হয় নিষ্পাপ এবং প্রবেশ করে অনাবিল শান্তির নিবাস জান্নাতে।
- বাংলাদেশের খবরের ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠান এই মেইলে- bkislamic247@gmail.com
লেখকের মেইল : sekhtanvir02@gmail.com
বিএইচ/