স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের পর প্রথম সাধারণ সভার দিন থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর হবে মেয়রের কার্যকাল। সেই হিসাবে সোমবার (২ জুন) শেষ হচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্বের মেয়াদ। এতে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মেয়র হিসেবে শপথ নেয়ার বিষয়টি নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ইশরাকের শপথ নিয়ে জটিলতার সমাধানে নির্বাচন কমিশনকে সংবিধানের আলোকে সিদ্ধান্ত নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ইশরাক হোসেনের বিষয়ে আদালতের কোন অবজারভেশন পাইনি। কিছু অবজারভেশন ও নির্দেশনা আসছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ইশরাকের শপথের বিষয়ে পলিসি ডায়লগের লোকাল গভার্মেন্ট ফেলো ড. তমিজউদদীন হায়দার বলেন, নির্বাচন কমিশনের স্থানীয় সরকার আইন রয়েছে। ওই আইনের বাইরে গিয়ে কাজ করার সুযোগ নেই কমিশনের। সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিলে ইশরাক হোসেনের মেয়র পদে শপথ এখন আর সম্ভব নয়।

নির্বাচন কমিশন আইনে যা আছে:

নির্বাচন কমিশনের স্থানীয় সরকার সিটি কর্পোরেশন আইন-

ক.২০০৯ (সংশোধিত)-এর ৪৯/১ ধারায় বলা হয়েছে, মেয়র-কাউন্সিলরদের প্রথম কর্পোরেশন সভার দিন থেকে পরের পাঁচ বছরের জন্য তারা দায়িত্ব পালন করবেন।

খ. ১৬ ধারায় বলা হয়েছে, মেয়রের পদ আকস্মিক শূন্য হলে ৯০ দিনের মধ্যে পদ পূরণ করতে হবে। যিনি নির্বাচিত হবেন, তিনি বাকি সময় দায়িত্ব পালন করবেন।

গ. ২৫/১ ধারায় বলা হয়েছে, অবস্থা বিশেষে কর্পোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ করা যাবে। সে ক্ষেত্রে একজন উপযুক্ত ব্যক্তি বা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রশাসক নিয়োগ করা যাবে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ও ঢাকা ১ম যুগ্ম জেলা জজ আদালত ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন। এরপর ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন তাকে মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশ করে। তবে এখনও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সেই গেজেট বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

সম্প্রতি ২৯ মে (বৃহস্পতিবার) আপিল বিভাগ ইশরাক হোসেনের শপথ ঠেকাতে করা আপিল খারিজ করে দেন, যা তার শপথগ্রহণে আর কোনো আইনি বাধা রাখেনি। একই সঙ্গে ইশরাকের শপথ নিয়ে জটিলতার সমাধানে নির্বাচন কমিশনকে সংবিধানের আলোকে সিদ্ধান্ত নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

এসআইবি/এএ