ই-অরেঞ্জের সিইও আমান উল্লাহ চৌধুরী ২ দিনের রিমান্ডে

আদালত প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৫, ১৯:২১

হত্যা মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ই-অরেঞ্জ’-এর সিইও আমান উল্লাহ চৌধুরীকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন মেজিস্ট্রেট জিয়া উদ্দিন আহমেদ এ রিমান্ডাদেশ দেন।
এর আগে শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিদেশগমনের চেষ্টা করার সময় পুলিশ আমান উল্লাহক গ্রেপ্তার করে। এ সময় বিষয়টি নিশ্চিত করে বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাসলিমা বলেন, তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রয়েছে। সে মামলারই একজন আসামি তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৮ আগস্ট প্রতারণার অভিযোগে গুলশান থানা পুলিশ আমান উল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছিল। সে সময় ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকা গুলশান থানার তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা ভারতে পালিয়ে যান। মামলার সূত্রে সোহেল রানার বোন সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমানসহ পাঁচজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল আদালত।
ওই মামলায় ই-অরেঞ্জের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার গ্রাহক মো. তাহেরুল ইসলাম বাদী হয়ে অভিযোগ করেন, প্রতিষ্ঠানটি ই-কমার্সের নামে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। পরবর্তীতে পুলিশ সোনিয়া ও মাসুকুরকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। এ মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন আমান উল্লাহও।
পুলিশ ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ই-অরেঞ্জ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হাজার হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ সংগ্রহ করেন আমান উল্লাহ। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় মোট ৫৪টি মামলা রয়েছে।
তিনি একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন, পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন।
২০২৪ সালের গণআন্দোলনের সময় থেকে তার কোনো খোঁজ ছিল না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
একাধিক সূত্র দাবি করছে, আমান উল্লাহ শুধু একটি প্রতারণা চক্রের নেতা নন, তিনি রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও বজায় রেখেছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালের গণআন্দোলনের সময় তিনি ঢাকা মহানগর ও জেলা যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছিলেন।
তদন্তে আরও উঠে এসেছে, ঢাকার এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় অবস্থিত তার এক অফিসে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ নামের একটি প্রচার সেল পরিচালিত হতো। এখানে সরকারের ঘনিষ্ঠ কিছু আইটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আন্দোলনবিরোধী প্রচারণায় যুক্ত ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আন্দোলনবিরোধী প্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে জনমত প্রভাবিত করার কাজ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
- এমআই