বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষককে হত্যার হুমকি; সাধারণ আলেম সমাজের নিন্দা

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৫, ১০:৫৭
-68a40434733a4.png)
বাংলাদেশের স্বনামধন্য দু’জন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ও কওমি মাদরাসা কেন্দ্রিক সংগঠন সাধারণ আলেম সমাজ। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ব্যক্তি দুই শিক্ষকের ছবি ব্যবহার করে হত্যার আহ্বান জানানোর পর এ প্রতিক্রিয়া জানায় তারা।
জানা গেছে, আক্রান্ত শিক্ষকেরা হলেন আইইউবি-এর সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন এবং মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির লেকচারার আসিফ মাহতাব উৎস। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যান্টার্কটিকা চৌধুরী নামে পরিচিত এক ব্যক্তি তাদের ছবি অঙ্কন করে লেখেন, ‘এই পাবলিক ফিগারদের হত্যা করুন।’ জাতীয় পরিচয়পত্রে ওই ব্যক্তির নাম সাফওয়ান চৌধুরী রেবিল হলেও বর্তমানে তিনি সাহারা চৌধুরী নামে সক্রিয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ঘটনায় সাধারণ আলেম সমাজ এক বিবৃতিতে বলে, মতবিরোধ বা ভিন্নমতের কারণে কাউকে হত্যার হুমকি দেওয়া ইসলাম, নৈতিকতা ও আইনের পরিপন্থী। তারা দুই শিক্ষকের পাশে থাকার ঘোষণা দেন এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সমকামিতা ও ট্রান্সজেন্ডারবাদ ইসলামি শরীয়ত, নৈতিক মূল্যবোধ এবং প্রচলিত দণ্ডবিধি অনুযায়ী অপরাধ। এই বিষয়ে জাতীয় মুফতি বোর্ডের পক্ষ থেকেও আগে ফতোয়া দেওয়া হয়েছে। আলেম সমাজের দাবি, এসব বিষয়ে গবেষণা ও একাডেমিক আলোচনাকে দমন করার উদ্দেশ্যে শিক্ষকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে।
এদিকে, হত্যার হুমকির ঘটনার পরও এখন পর্যন্ত কোনো আইনি প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন আলেম সমাজ। বরং কিছু বামপন্থী রাজনৈতিক ব্যক্তি ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে হুমকিদাতার সমর্থনে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন।
আলেম সমাজের বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা রাখা দুই শিক্ষক আগেও হয়রানি ও গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন। তাদের প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া সত্ত্বেও কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া উদ্বেগজনক।
তারা আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র ও প্রশাসনের দায়িত্ব হলো নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি কোনোভাবেই বরদাশত করা যায় না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সক্রিয় হয়ে এর প্রতিকার করতে হবে।’
সংগঠনটি সমকামিতা-ট্রান্সজেন্ডারবাদবিরোধী অবস্থানকে ধর্মীয় ও সামাজিক দায়িত্ব বলে বিবেচনা এবং একই সঙ্গে হত্যার হুমকি ও সহিংসতাকে তারা ‘ঘৃণ্য অপরাধ’ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ডিআর/আইএইচ