কারাগার কোথায় হবে তা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত : চিফ প্রসিকিউটর

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:০৬

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, কোনো স্থাপনাকে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা বা ব্যবহার করা প্রসিকিউশন বা তদন্ত সংস্থার বিষয় নয়। এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় সরকার বা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। প্রসিকিউশনের দায়িত্ব শুধুমাত্র আইন অনুযায়ী তদন্ত ও মামলা পরিচালনা করা।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, কোন জায়গাকে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হবে, সেটা প্রসিকিউশন বা তদন্ত সংস্থার বিবেচ্য বিষয় নয়। আমাদের বিবেচ্য বিষয় হলো আইন অনুযায়ী কাজ করা। আসামিকে যদি গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হবে। এটি সংবিধান, ট্রাইব্যুনাল আইন ও ফৌজদারি কার্যবিধিতে স্পষ্টভাবে বলা আছে।
চিফ প্রসিকিউটরের এই বক্তব্য আসে এমন সময়ে, যখন সরকার সম্প্রতি ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করেছে।
গত ১২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কারা-১ শাখা থেকে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব মো. হাফিজ আল আসাদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ধারা ৫৪১(১) ও দ্য প্রিজন্স অ্যাক্ট, ১৮৯৪ এর ধারা ৩(বি) অনুযায়ী ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোড সংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত এমইএস বিল্ডিং নং–৫৪-কে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করা হলো।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, এই ঘোষণা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জারি করা হয়েছে এবং তা অবিলম্বে কার্যকর হবে। তবে এ কারাগার ঘোষণার উদ্দেশ্য বা মেয়াদ সম্পর্কে কোনো বিস্তারিত তথ্য সেখানে উল্লেখ করা হয়নি।
সরকারের এই সিদ্ধান্ত আসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার প্রেক্ষাপটে, যেখানে বিগত সরকারের সময়কার ২৪ জন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান গত ১১ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ট্রাইব্যুনালের পরোয়ানাভুক্ত ১৫ জন কর্মকর্তা সেনা হেফাজতে আছেন, একজন কর্মকর্তা— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবির আহমেদ পলাতক।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ট্রাইব্যুনাল সংবিধান ও আইনের বিধান অনুযায়ী কাজ করে। আসামি গ্রেপ্তারের পর আদালতের নির্দেশই চূড়ান্ত। আদালত যেখানে রাখার নির্দেশ দেবেন, সেখানেই রাখা হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রসিকিউশন বা তদন্ত সংস্থার কাজ হলো মামলার প্রস্তুতি, প্রমাণ সংগ্রহ ও আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা— কারাগারের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়।
এনএমএম/এমএইচএস