১৩ সেনা কর্মকর্তার পরবর্তী শুনানি ৩ ও ৭ ডিসেম্বর
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:২২
ছবি : সংগৃহীত
আওয়ামী লীগের সরকারের সময় টিএফআই-জেআইসি সেলে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় সেনাবাহিনীর ১৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি পৃথক মামলার শুনানি পিছিয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-১ এ শুনানির নতুন দিন ধার্য করেছেন আগামী ৩ ও ৭ ডিসেম্বর।
রোববার (২৩ নভেম্বর) বিচারপতি গোলাম মোর্তোজা মজুমদার নেতৃত্বে দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এদিন শুনানি ধার্য করেন। সেনাবাহিনীর ১৩ কর্মকর্তাকে প্রিজনভ্যানে করে সকাল ১০টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এই দুটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ মোট ৩০ জন আসামি রয়েছে।
হাজির করা সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, ডিজিএফআই-এর সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
এদিন সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। মোতায়েন থাকে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির অতিরিক্ত সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত।
গত ২০ নভেম্বর মামলার শুনানির দিন ধার্য ছিল। তবে প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানির নতুন দিন হিসেবে আজকের তারিখ ঠিক করা হয়।
এর আগে ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১৩ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে আদালত তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজিরের জন্য সাত দিনের মধ্যে জাতীয় দুই দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়, যা ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।
গত ৮ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের এ দুই মামলায় মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন।
পরে অভিযোগ আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। র্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশনের (টিএফআই) গোপন সেলে বন্দি রেখে নির্যাতনের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়। এসব মামলায় ১০ সেনা কর্মকর্তা গ্রেপ্তার রয়েছেন।
অন্যরা হলেন- শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, র্যাব কর্মকর্তা কেএম আজাদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, মাহাবুব আলম, আবদুল্লাহ আল মোমেন, সারওয়ার বিন কাশেম, খায়রুল ইসলাম, মশিউর রহমান জুয়েল ও সাইফুল ইসলাম সুমন।
এছাড়া জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি) বা ‘আয়নাঘর’-এ গুমের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেক মামলায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়।
এ মামলায় শেখ হাসিনা ও তারিক আহমেদ সিদ্দিক ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন- ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক লে. জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আকবর হোসেন, সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) সাইফুল আবেদিন, লে. জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, সাবেক ডিজি লে. জেনারেল তাবরেজ শামস চৌধুরী, সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক, মেজর জেনারেল তৌহিদুল ইসলাম, মেজর জেনারেল সরওয়ার হোসেন, মেজর জেনারেল কবির আহাম্মদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী ও লে. কর্নেল (অব.) মখসুরুল হক। এ মামলায় তিনজন কারাগারে থাকলেও বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
এমএইচএস

