রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির মাধ্যমে প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দুদকের করা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হবে আজ।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালত এ রায় ঘোষণা করবেন।

এ রায়কে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সকাল থেকেই আদালতের প্রধান ফটকগুলোতে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের সতর্ক অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে। বিশেষ জজ আদালতের এজলাস ভবনের সামনের বারান্দা ও প্রবেশপথে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, নিয়মিত নিরাপত্তার পাশাপাশি গুরুত্ব বিবেচনায় অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। সন্দেহজনক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে।

এর আগে গত ২৫ নভেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আদালত।

এ মামলার আসামিরা হলেন- শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, তার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

এদের মধ্যে একমাত্র মোহাম্মদ খুরশীদ আলম গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন; বাকিরা পলাতক।

গত শুনানিতে দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর তরিকুল ইসলাম আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আবেদন করেন। অন্যদিকে কারাগারে থাকা খুরশীদ আলমের পক্ষে আইনজীবী শাহীনুর রহমান অভিযোগ প্রমাণিত নয় দাবি করে খালাস চান।

পলাতকদের পক্ষে কোনো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়নি। শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য আজকের তারিখ নির্ধারণ করেন।

মামলার নথি অনুযায়ী, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন মামলা দায়ের করেন। পরবর্তী তদন্ত শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া গত ১০ মার্চ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। এ বছরের ৩১ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন আদালত।

বিচার প্রক্রিয়ায় মোট ৩২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। এখন সবার দৃষ্টি আজকের রায়ের দিকে।

ডিআর/এমব