Logo

আইন ও বিচার

২০২৫ সালের আলোচিত বিচারিক রায় ও প্রধান প্রধান মামলা

Icon

আইন ও আদালত ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১০

২০২৫ সালের আলোচিত বিচারিক রায় ও প্রধান প্রধান মামলা

২০২৫ সালের সবচেয়ে আলোচিত বিচারিক রায় ও প্রধান প্রধান মামলার মধ্যে রয়েছে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড (Crimes against Humanity verdict, 17 Nov 2025)। ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১, ১৭ নভেম্বর ২০২৫- Crimes against Humanity রায়ে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ ও গণ-অভ্যুত্থানের সময় পুলিশের ও নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা নিপীড়ন, গুলি, হত্যাকাণ্ড, এবং সাধারণ জনসাধারণের ওপর ‘ড্রোন, হেলিকপ্টার ও প্রাণঘাতী অস্ত্র’ ব্যবহার করার নির্দেশ দেয়ার অভিযোগ। প্রসিকিউশন ২০২৫ সালের ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে।

রায় ও সাজা : ১৭ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা করেন- শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালকে মৃত্যুদণ্ড; অপর এক আসামি, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে (যিনি রাজসাক্ষী হিসেবে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ২৬ নভেম্বর ২০২৫ তার পূর্ণাঙ্গ রায় আইনজীবীদের হাতে পৌঁছে। রায়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সাজাপ্রাপ্তদের দেশ ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত, এবং শহীদ ও আহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রথমবারের মত, বাংলাদেশের ইতিহাসে একজন (সাবেক) প্রধানমন্ত্রীকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ ও Crimes against Humanity-র মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল। ট্রায়াল-করা, সাক্ষ্য-গ্রহণ, এবং রায় ঘোষণাই ছিল সরাসরি, টেলিভিশনে-লাইভ সম্প্রচারিত।এই রায় রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশাল ধাক্কা: এর ফলে সাবেক শীর্ষ রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে বিচার, ক্ষমতার অপব্যবহার, ও গণহত্যার দায়- আইনগতভাবে প্রমাণিত হলো।

মানবাধিকারমূলক দৃষ্টিকোণ থেকে রায়ের সময়, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর এবং জাতিসংঘের পক্ষ থেকে মৃত্যুদণ্ড প্রসঙ্গে উদ্বেগ ও নিন্দা এসেছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ভবিষ্যত নির্বাচন, ক্ষমতার বন্টন, রাজনীতি-আইন-ন্যায় ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ইত্যাদির দিক থেকে দেশজুড়ে তীব্র আলোচনার সূত্রপাত হয়।

Purbachal plot scam case (Plot allocation / Land scam) - ১ ডিসেম্বর ২০২৫ :  ‘রাজউক-পূর্বাচল প্লট বরাদ্দ চক্র : আদালত ১ ডিসেম্বর ২০২৫- শেখ হাসিনা ৫ বছর, তার বোন শেখ রেহেনা ৭ বছর, এবং টিউলিপ সিদ্দিকীর ২ বছরের কারাদণ্ড’। রাজধানীর বৃহৎ সরকারি উদ্যোগ (পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্প) এর নামে সরকারি প্লট অনৈতিকভাবে বরাদ্দ; ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রভাব প্রদর্শন করে প্লট পেয়ে যাওয়ার অভিযোগ।

মামলাটি ২০২৫ সালের আগস্টে শুরু। রায় ও সাজা : ১ ডিসেম্বর ২০২৫- আদালত ১৭ আসামির মধ্যে, ৩ জন মূল অভিযোগ প্রাপ্ত: শেখ হাসিনাকে ৫ বছরের কারাদণ্ড, শেখ রেহানাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড, Tulip Siddiq (UK MP) ২ বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা। অন্য আসামি ও জরিমানা: অন্যান্য ১৪ আসামির  প্রত্যেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড; একই জরিমানা। বিদেশ ও আন্তর্জাতিক মঞ্চেও বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক বিচার’ ও politically motivated trials হওয়া-নেয়া বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেসময়, সংশ্লিষ্টরা ‘রায় ভুল ও প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ’ বলে প্রতিবাদ করেছে।

এছাড়া পরীক্ষামূলকভাবে গত (২০২৫) Contempt of court মামলায় ৬ মাসের কারাদণ্ড হয়েছিলো শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। তবে প্রধান রূপে তা ছিল তুলনামূলকভাবে কম আলোচিত।

২০২৫-এ অনেক ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ/আইন প্রয়োগ-সংক্রান্ত’ মামলা শুরু হয়েছে; তবে তাদের রায় বা চার্জপ্রক্রিয়া ২০২৫ সালের শেষে পর্যন্ত পুরোপুরি শেষ হয়নি। প্রথমবারের ইতিহাস : কখনো আগে বাংলাদেশের (সাবেক) প্রধানমন্ত্রীকে মানবতাবিরোধী অপরাধিকে মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়নি, এই রায় ইতিহাস গড়েছে। ২০২৪ সালের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থান, ক্ষমতা পরিবর্তন, এবং পরবর্তী সরকার-মধ্যস্থভাবে বিচার শুরু; রায়গুলো ছিল ২০২৫-এর রাজনৈতিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার অংশ। ২০২৫ সালের রায়গুলো দেখিয়েছে-  আইন, ন্যায়বিচার এবং দায়বদ্ধতা কেবল সাধারণ পর্যায়েরই নয়, দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের রাজনীতিক ও ক্ষমতাধারী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও প্রয়োজ্য।

এনএ

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

আইন ও আদালত

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর