পূর্বতন অফিসের তথ্য ফাঁস কেন অপরাধ গণ্য হয়
আইন ও আদালত ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৯
রাষ্ট্রের গোপন বা সংবেদনশীল নথি ও তথ্য সংরক্ষণে কঠোর আইন বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও অনেকক্ষেত্রে পূর্বতন কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের মাধ্যমে এসব নথি ফাঁসের ঘটনা সামনে আসে। বিশেষ করে Official Secrets Act, 1923 (ওএসএ1923) এমন যেকোনো তথ্য ফাঁসকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি চাকরি শেষ হয়ে গেলেও গোপন নথির দায় শেষ হয় না।
আইন কী বলে : ওএসএ ১৯২৩-এর ধারা অনুযায়ী, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা বা পররাষ্ট্র-স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো নথি, নকশা, পরিকল্পনা, কোড বা পাসওয়ার্ড অবৈধভাবে প্রকাশ করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন। শাস্তির মধ্যে রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ড; গুরুতর ক্ষেত্রে আরো কঠিন দণ্ডের বিধানও রয়েছে।
পূর্বতন কর্মকর্তার ক্ষেত্রেও অপরাধ কেন? : আইনে উল্লেখ আছে, দায়িত্ব পালনকালীন কিংবা অবসর নেওয়ার পরও কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁস করলে সেটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। অর্থাৎ, “পূর্বতন অফিস” বা “পুরনো নথি” বলে কোনো দায় এড়ানো যাবে না-যদি নথিটি গোপন বা সংবেদনশীল শ্রেণিতে পড়ে।
গোপন নথি ফাঁসের অভিযোগে স্থগিত : সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক কর্মকর্তাকে সংবেদনশীল নথি ফাঁসের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্তে দেখা গেছে, নথিগুলো ছিল নীতি-সংক্রান্ত ও ব্যবসায়িক প্রভাব ফেলতে পারে- এমন শ্রেণিভুক্ত গোপন নথি। তাই ওএসএ অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
জনস্বার্থ ও সাংবাদিকতার প্রশ্ন : অন্যদিকে আইনজীবীরা মনে করিয়ে দেন যে, সব নথিই গোপন নয়। দুর্নীতি, অনিয়ম বা প্রশাসনিক স্বচ্ছতা সংক্রান্ত তথ্য জনস্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ হলে তা প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হয়। তবে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা-সংক্রান্ত নথির ক্ষেত্রে আইন সর্বদাই কঠোর।
অতএব, পূর্বতন কর্মকর্তা হলেও সরকারি গোপন নথি প্রকাশ করা গুরুতর অপরাধ। কারণ রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা রক্ষায় ওএসএ ১৯২৩ স্পষ্টভাবে দায় নির্ধারণ করেছে। তবে জনস্বার্থের প্রশ্নে নথি ফাঁসকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা উচিত কি না-তা নিয়ে আলোচনাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
বিকেপি/এমবি

