ওয়ারেন্টি সেবা না পেলে ভোক্তার অধিকার লঙ্ঘন
আইন ও আদালত ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৪২
ইলেকট্রনিক পণ্য কেনার সময় বিক্রেতা যে ওয়ারেন্টি বা গ্যারান্টি দেয়, তা ভোক্তার সঙ্গে একটি বাধ্যতামূলক প্রতিশ্রুতি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্যে ত্রুটি দেখা দিলে মেরামত, বদলি কিংবা টাকা ফেরত- এসব সেবা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে নির্মাতা ও বিক্রেতার। কিন্তু দেশজুড়ে নানা অভিযোগ উঠছে- অনেক প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়েও এসব সেবা দিতে গড়িমসি করছে। এতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯- এর অধীনে সরাসরি আইনি অপরাধ গঠিত হয়।
আইনে স্পষ্ট বাধ্যবাধকতা :
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ধারা অনুযায়ী, কোনো বিক্রেতা বা সরবরাহকারী ওয়ারেন্টি/গ্যারান্টির প্রতিশ্রুতি অনুসারে সেবা দিতে ব্যর্থ হলে তা ‘ভোক্তার অধিকার লঙ্ঘন’ হিসেবে গণ্য হবে। এতে প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড, অথবা সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তা চাইলে ক্ষতিপূরণ বা পণ্য বদলের লিখিত প্রতিকার পাওয়ার অধিকার রাখেন।
আইন অনুযায়ী, ভোক্তা যদি প্রতিশ্রুত সেবা না পান, তাহলে ৩০ দিনের মধ্যে নিকটস্থ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (DNCRP)- এ লিখিত অভিযোগ করতে পারবেন। অভিযোগ করার সময় ক্রয় রসিদ, গ্যারান্টি/ওয়ারেন্টি কার্ড, ত্রুটির প্রমাণ (ছবি/ভিডিও), এবং বিক্রেতার তথ্য দাখিল করতে হয়।
অধিদপ্তরের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা :
অভিযোগ পাওয়ার পর অধিদপ্তর তদন্ত করে দায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক জরিমানা, আইনগত নোটিশ, বা পণ্য বদল/সেবা দিতে বাধ্য করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বাংলাদেশের খবরকে জানান, ‘বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান ওয়ারেন্টি দেওয়ার পরও তা পালন করে না। এখন এসব বিষয়ে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে, অভিযোগকারী ভোক্তা দ্রুত প্রতিকার পাচ্ছেন।’
ভোক্তা ভোগান্তি- দায় এড়ানোর চেষ্টায় ব্যবসায়ীরা :
বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায়, দোকান বা সেবা কেন্দ্রগুলো ত্রুটিকে ‘ব্যবহারজনিত ভুল’ বলে দাবি করে দায় এড়াতে চায়। আবার কেউ কেউ দীর্ঘ সময় ধরে সার্ভিস সেন্টারে ঘুরিয়ে ভোক্তাকে হয়রানি করে। ভোক্তাদের দাবি, সচেতনতার অভাব ও তথ্য না জানার কারণে অনেকেই অভিযোগ করতে সাহস পান না।
কি করবেন ভোক্তা? :
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেকোনো ইলেকট্রনিক পণ্য কেনার পর রসিদ ও ওয়ারেন্টি কার্ড সংরক্ষণ করতে হবে। ত্রুটি দেখা দিলে দ্রুত বিক্রেতাকে জানান এবং লিখিত রসিদ নিন। নির্ধারিত সময়েও সেবা না পেলে ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ দাখিল করুন। প্রয়োজনে ক্ষতিপূরণ বা পণ্য বদলের দাবি করতে পারেন।
এনএ

