
তেজগাঁওয়ে সমকাল কার্যালয়ের সভাকক্ষে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। ছবি : মাসুদ রানা
‘বিতর্ক মানেই যুক্তি বিজ্ঞানে মুক্তি’ প্রতিপাদ্যে ‘বিএফএফ সমকাল জাতীয় বিজ্ঞান বিতর্ক উৎসবের’ ১১তম আসরের যাত্রা শুরু হয়েছে। শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সমকাল কার্যালয়ের সভাকক্ষে এ আয়োজন উদ্বোধন করা হয়।
বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন (বিএফএফ) ও সমকালের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সহযোগী হিসেবে থাকছে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার এবং বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনের লক্ষ্যে ২০১৩ সাল থেকে আয়োজিত হয়ে আসছে স্কুলভিত্তিক বিজ্ঞান বিতর্ক প্রতিযোগিতা। করোনার সময় ২০২১ সালে বিতর্ক প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তবে এ বছর বিতার্কিকদের নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে টাইমস মিডিয়া ভবনের ব্যাঙ্কুয়েট হলে দিনব্যাপী কর্মশালা ও প্রীতি বিতর্ক আয়োজন করা হয়।
সমকালের পাঠক সংগঠন সুহৃদ সমাবেশের তত্ত্বাবধানে এবার ৬৪ জেলার ৫২০টি স্কুলের এক হাজার ৫৬০ বিতার্কিক এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। প্রতিটি জেলা থেকে ৮টি দল বিতর্ক প্রতিযোগিতার প্রাথমিক রাউন্ডে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।
জেলা পর্যায়ের বিজয়ী দলগুলোকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে বিভাগীয় প্রতিযোগিতা। বিভাগীয় প্রতিযোগিতার বিজয়ীরা পাবে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ।
স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে তিন সদস্যের দল গঠন করে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন।
রোববার (১৭ আগস্ট) থেকে প্রচার-প্রচারণা ও দল গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। এ পর্যায়ে প্রতিটি জেলা থেকে ন্যূনতম ২৫টি বিদ্যালয়ে প্রচারণা চালানো হবে। জেলা পর্যায়ে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে প্রতিযোগিতা, যা শেষ হবে ৪ অক্টোবর। এর পর ৯ অক্টোবর বিভাগীয় পর্যায়ে বিতর্ক শুরু হয়ে চলবে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। চূড়ান্ত পর্বের বিতর্ক ও সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে আগামী ৭ ও ৮ নভেম্বর। প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন দলের প্রত্যেক সদস্য পুরস্কার হিসেবে পাবেন ল্যাপটপ। প্রথম রানার্সআপ দলের সদস্যরা পাবেন নোটবুক। সেমিফাইনাল পর্বে উত্তীর্ণ অন্য দুটি দলের প্রত্যেককে দেওয়া হবে স্মার্টফোন। পাশাপাশি সবাই পাবেন ক্রেস্ট ও সনদ।
সমকালের হেড অব ইভেন্টস হাসান জাকির এবং সমকাল সুহৃদ সমাবেশের বিভাগীয় সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএফএফের নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ, বিতর্ক প্রতিযোগিতার নিয়মিত বিচারক রাশেদুল ইসলাম পল্লব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বিতার্কিক নিশাত সুলতানা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেট অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল্লাহ আহমেদ চৌধুরী।
সমকাল পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন প্রকাশক আবুল কালাম আজাদ, সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শরীফুল ইসলাম, অতিরিক্ত বার্তা সম্পাদক মনিরুল ইসলাম। অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন সিলেট ব্যুরো চিফ মুকিত রহমানী এবং সুহৃদ সমাবেশ ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব ফরিদুল ইসলাম নির্জন।
অনুষ্ঠানে সমকালের উপসম্পাদক শাহেদ চৌধুরী, সহযোগী সম্পাদক জাকির হোসেন ও শেখ রোকন, অনলাইন ইনচার্জ গৌতম মণ্ডল, বার্তা সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রঞ্জু, উপপ্রধান প্রতিবেদক সাহাদাত হোসেন পরশ, সহকারী সম্পাদক জিয়া হাসান, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের পিআর এবং ব্যাংক ফাউন্ডেশনের ইনচার্জ হারুনুর রশীদ, সাবেক কৃতি বিতার্কিক মাজেদ আজাদ, শাকিল আহমেদ, মো. ইফতেখারুল ইসলাম অপু এবং বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশনের (বিডিএফ) সভাপতি প্লাবন গাঙ্গুলি, সুহৃদ সমাবেশ ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী বলেন, তারুণ্যের মুক্তচিন্তা এবং একটি সুন্দর আগামীর জন্য আমরা এক যুগ ধরে এ প্রতিযোগিতা আয়োজন করছি। এবারের আয়োজন আরও বেশি মানুষের কাছে নিতে পারব বলে আশা করছি।
মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এ ধরনের আয়োজন আমাদের ছেলেমেয়েদের সৃজনশীলতা বা মননশীলতার চর্চার পাশাপাশি যুক্তিবাদী বিজ্ঞানমনস্ক হয়ে গড়ে উঠতে সহায়তা করে। আগামীতে আমরা এ আয়োজনে আরও ভালোভাবে যুক্ত হব।
শরীফুল ইসলাম বলেন, যে দেশে বিজ্ঞান চর্চা কম, সেই দেশ এগোতে পারে না। একদম মাঠ পর্যায়ে কীভাবে বিজ্ঞান চর্চা বাড়ানো যায়, এই চিন্তা থেকে এই আয়োজন।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই বিতর্ক উৎসবের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাহস সঞ্চার হয়। জেলার পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলা থেকে অন্তত একটি বিদ্যালয়কেও যদি এ আয়োজনে যুক্ত করা যায়, তাহলে বিতর্ক উৎসব গ্রামেও ছড়িয়ে পড়বে।
সমকাল সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য পর্ব শেষে টাইমস মিডিয়া ভবনের নিচতলা সংলগ্ন সবুজ চত্বরে বেলুন উড়িয়ে প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করা হয়।