ভোটের আগে জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন প্রশ্নে মতভিন্নতা

বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১১:১৩
-68903dd884fb9-689971ad9838a-68a007bd42161-68a94e0210498.jpg)
প্রথম আলো প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘ভোটের আগে জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন প্রশ্নে মতভিন্নতা’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই জুলাই জাতীয় সনদ তথা সংস্কার প্রস্তাবগুলোর পূর্ণ বাস্তবায়ন চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তারা গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে জুলাই সনদের সব প্রস্তাব বিধিবিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে। জুলাই জাতীয় সনদের সমন্বিত চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে নিজেদের এই অবস্থান জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে জানিয়েছে দলটি। শুক্রবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে মতামত জমা দেয় এনসিপি। জুলাই সনদের বাস্তবায়ন বিষয়ে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের অবস্থানও এনসিপির কাছাকাছি।
এই ক্ষেত্রে বিএনপির অবস্থান হলো, কিছু আইন অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এগুলো অন্তর্বর্তী সরকার আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই করতে পারে। আর সংবিধানসংক্রান্ত সংস্কারগুলো আগামী জাতীয় সংসদের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন করতে হবে।
সমন্বিত চূড়ান্ত খসড়ায় বলা হয়েছে, ‘আমরা এই মর্মে একমত যে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর যে সকল প্রস্তাব/সুপারিশ অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য বলে বিবেচিত হবে, সেগুলো কোনো প্রকার কালক্ষেপণ না করেই পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার ও অন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসমূহ সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করবে।’
সমকাল প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘অপবাদ ছড়িয়ে ৩ জনকে হত্যা’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের তিনটি জেলায় গত বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার অপবাদ ছড়িয়ে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এদের একজন কিশোর, একজন তরুণ এবং একজন যুবক। নিহতদের দুজনকে চোর সন্দেহে এবং একজনকে চাঁদাবাজির অভিযোগে পিটানো হয়। এর মধ্য দুটি ঘটনা পরিকল্পিত বলে পুলিশ সন্দেহ করছে। রংপুরের তারাগঞ্জে গত ১০ আগস্ট ভ্যানচোর সন্দেহে পিটিয়ে দুই ব্যক্তিকে হত্যার রেশ কাটতে না কাটতে গত ২৪ ঘণ্টায় এই তিন হত্যার ঘটনা ঘটে। এই নিয়ে চলতি মাসে গণপিটুনিতে ১৪ জনের প্রাণ গেছে।
শুক্রবার চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে এক কিশোরকে টাকা চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নেয়াখালীর হাতিয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে প্রাণ গেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) এক শ্রমিকের। কুমিল্লায় গত বৃহস্পতিবার রাতে চাঁদাবাজির অভিযোগে হাত-পা বেঁধে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। চাঁদাবাজি, চুরি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে কোতোয়ালি মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা আছে।
বাংলাদেশের খবর প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘পিআর পদ্ধতি নিয়ে বিভক্তি : টালমাটাল রাজনীতির মাঠ’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি নিয়ে বিভক্তিতে দেশের রাজনীতির মাঠ এখন টালমাটাল। বিএনপিসহ কয়েকটি দল এই পদ্ধতির বিপক্ষে। আর জামায়াত, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলন এই পদ্ধতি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে রাজপথে নেমেছে। ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে একমত এনসিপিও। দলগুলোর নেতারা এ ইস্যুতে যে যার দলের অবস্থানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরছেন। বিশ্লেষকদের মাঝেও বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এ মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে পিআর পদ্ধতি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই পদ্ধতি চালুর পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো।
এসব দলের নেতারা প্রতিদিন এই ইস্যুতে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন। বিএনপি নেতারা পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে। তারা বলছেন, বাংলাদেশের চলমান বাস্তবতায় এ পদ্ধতি গ্রহণযোগ্য নয়। এতে সরকারের ভিত্তি দুর্বল হবে। আর জামায়াত, চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মনে করছে, ফের ফ্যাসিবাদ শাসন ব্যবস্থা যেন ফিরে না আসে সেজন্য এটি চমৎকার ব্যবস্থা। এ পদ্ধতিতে প্রত্যেকের ভোট কাজে লাগে।
ফলে, কোন দলের একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হয় না। অন্যান্য দাবির সঙ্গে পিআর বাস্তবায়নে গত ১৩ আগস্ট ঢাকা মহানগরে জামায়াত বিক্ষোভ করেছে। একই ইস্যুতে ঢাকায় বিক্ষোভের পর আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলায় ১৫ দিনব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ডেকেছে দলটি। এনসিপি নেতারা এই দাবি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছেন। পিআর পদ্ধতির স্বপক্ষে থাকা দলগুলো তাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে ভোটে যাওয়া নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে। তবে, বিএনপি বলছে এসব দল ভোট পেছাতে তালবাহানা করছে।
কালের কণ্ঠ প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘মায়ানমার সীমান্ত : পণ্যের বদলে আসছে ইয়াবা’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিনিয়ত অভিনব কৌশলে মাদক কারবারিদের বিভিন্ন চক্র মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে মূলত ইয়াবার বড় চালান নিয়ে আসছে। গত প্রায় ৯ মাস ধরে দেশ থেকে ওষুধ, খাদ্য, নির্মাণসামগ্রী, কৃষি উপকরণসহ বিভিন্ন পণ্যের বিনিময়ে মায়ানমার থেকে ইয়াবা, আইসসহ আরো মাদকদ্রব্য নিয়ে আসতে সংশ্লিষ্ট চক্রগুলোর তৎপরতা বেড়েছে। কোস্ট গার্ড, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, এসব পণ্যের বিনিময় হয় সাগরের মায়ানমার অংশে। বিশেষ করে মাছ ধরার নৌযানে পণ্য নেওয়া হয় মায়ানমারের আরাকান আর্মির সদস্যদের কাছে।
এসব পণ্যের বিনিময়ে সেখান থেকে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য নৌযানে আনা হচ্ছে সাগর ও নদী ব্যবহার করে। এ দেশ থেকে মায়ানমারে পণ্য পাচারকালে কোস্ট গার্ড গত এক মাসে কমপক্ষে চারটি চালান আটক করেছে। এর আগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরও পাচারে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
মানবজমিন প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘জুলাই সনদ : যেসব ইস্যুতে আর ছাড় দেবে না বিএনপি ও সমমনারা’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই সনদের তিন ইস্যুতে ছাড় দিতে রাজি নয় বিএনপি ও সমমনা জোটের দলগুলো। তারা জানিয়েছেন, জুলাই সনদকে সংবিধানের উপরে স্থান দেয়া হয়েছে, এটা ঠিক হয়নি। এ ছাড়া, জুলাই সনদ নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না বলে অঙ্গীকারনামায় যে কথা বলা হয়েছে সেটাতেও আপত্তি জানিয়েছেন তারা। পটভূমিতে ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ’৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান, ’৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন এবং সংগ্রাম স্থান না পাওয়ার বিষয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
তাদের ভাষ্য, দ্বিমত এবং একমতের বিষয়গুলোও সনদে সঠিকভাবে উপস্থাপন হয়নি। শব্দ চরণ এবং বাক্য গঠনেও ত্রুটি দেখছেন তারা। ওদিকে, কোনো রাজনৈতিক ‘সমঝোতার দলিল’ সংবিধানের উপরে স্থান পেতে পারে কিনা- সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। দলটির ভাষ্য, জুলাই সনদকে সংবিধানের উপরে জায়গা দেয়ার সুযোগ নেই। জুলাই সনদ নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না বলে অঙ্গীকারনামায় যে কথা বলা হয়েছে সেটাও গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করছে দলটি। এ ছাড়া, সনদে অঙ্গীকারনামা নিয়েও আপত্তির কথা জানিয়েছে দলটি। তবে, এসব বিষয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছে বিএনপি ও সমমনারা।
যুগান্তর প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘ঋণপ্রবাহের গতি সর্বনিম্ন’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের সামগ্রিক বা অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধির হার রেকর্ড পরিমাণে কমেছে। বিদায়ি অর্থবছরে এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ। যা স্মরণকালের সর্বনিম্ন। বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহের হার রেকর্ড পরিমাণে কমায় সামগ্রিক ঋণ প্রবাহে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বিদায়ি অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাদ ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এটিও রেকর্ড। এমন কী বেসরকারি খাতসহ সামগ্রিক খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির হার করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সময়ের চেয়েও কম। মূলত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ মাত্রাতিরিক্ত হারে কমার কারণে এমনটি হয়েছে। দেশের মোট ঋণ প্রবাহের মধ্যে বেসরকারি খাতই নিচ্ছে প্রায় ৭৭ শতাংশ বাকি ২৩ শতাংশ সরকারি ও অন্যান্য খাতে যাচ্ছে। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির তথ্যউপাত্ত নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তৈরি হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অপর একটি প্রতিবেদনে ঋণ প্রবাহ কমার জন্য বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেই ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনা, ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও আন্দোলন পরবর্তী সৃষ্ট অস্থিরতা, ডলার সংকট ও দাম বৃদ্ধি, ঋণের সুদের ঊর্ধ্বমুখী হার, চড়া মূল্যস্ফীতি, সংকোচনমুখী মুদ্রানীতিকে দায়ী করা হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়, সামগ্রিকভাবে ঋণ প্রবাহ কমলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক উৎপাদন খাতে ঋণের জোগান অব্যাহত রেখেছে। উৎপাদনমুখী কিছু খাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ তহবিল থেকে ঋণের জোগান দেওয়া হচ্ছে। এভাবে উৎপাদন খাতকে সঠিক ধারায় রাখা হয়েছে। যে কারণে শিল্প ও কৃষি উৎপাদন এখনো ঊর্ধ্বমুখী।
আজকের পত্রিকা প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘এনসিটিবি: পাঠ্যবইয়ে আবার পরিবর্তন আসছে’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক বছরের ব্যবধানে আবারও পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ পরিবর্তন আসবে আগামী বছরের মাধ্যমিক, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের বেশ কিছু বিষয়ে। কী কী পরিবর্তন আনা হবে, তা চূড়ান্ত করার জন্য এর মধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এবারের পরিবর্তন-প্রক্রিয়ায় পাঠ্যবইয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে আরও লেখা যুক্ত করা হতে পারে। এ ছাড়া শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের পুরো ভাষণের পরিবর্তে সংক্ষিপ্ত রূপ অন্তর্ভুক্ত করা, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের ঘটনা উল্লেখসহ আরও কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হবে।
তবে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পাঠ্যবইয়ে কী কী পরিবর্তন আসবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হয়েছে। ১৮ আগস্ট জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) বৈঠকে এই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম চার সদস্যের এই কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এমবি