
দেশে চলমান অস্থিরতা ও কার্যব্যবস্থায় অসহযোগিতার কারণে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কাজ করতে না পারলে পদে থাকার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এমনকি পদত্যাগের বিষয়েও তিনি চিন্তা করছেন বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২১ মে) দুপুরে উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের পর এক অনির্ধারিত বৈঠকে অন্য উপদেষ্টাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক উপদেষ্টা ও সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সূত্রগুলো জানায়, বৈঠকে প্রতিদিন রাজধানীর সড়ক অবরোধ, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার অনৈক্য, কাঙ্ক্ষিত সংস্কারে অগ্রগতির অভাব এবং প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের অসহযোগিতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, ‘সংস্কারের কোনো অগ্রগতি নেই। কাজ করতে পারছি না। তাহলে আর থাকব কেন?’
বৈঠকের একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা চাইলে আরেকটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করুন। আমি চলে যেতে চাই।’
একইদিন সন্ধ্যায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’য় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে নাহিদ ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়টি ভাবছেন।’
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আরও আলোচনা হয় আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েও। বর্তমান পরিস্থিতিতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ব্যালট ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটলে তা পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষে রোধ করা সম্ভব হবে না। আর একটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হলে জনরোষের মুখে তাকেই দায় নিতে হবে—এমন মন্তব্যও করেন তিনি।
বৈঠকে জাতির উদ্দেশে ভাষণের প্রস্তাব তোলেন প্রধান উপদেষ্টা। দেশের চলমান সংকট ও বাধাগুলোর কথা তুলে ধরার প্রস্তাব দেন তিনি। এমন একটি ভাষণের খসড়াও প্রণয়ন করা হয়, তবে শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে পরে আবার আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
এমএইচএস