আমাদের লক্ষ্য জাতীয় সনদ প্রতিষ্ঠা করা : আলী রীয়াজ

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৫, ১৭:৪১
-683301d2729af.jpg)
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি : সংগৃহীত
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তা জানানো হবে। আর যেসব বিষয়ে সমঝোতা হয়নি, সেগুলোর বিষয়েও জনগণকে অবহিত করা হবে স্বচ্ছতার স্বার্থে। কারণ, আমাদের মূল লক্ষ্য একটি জাতীয় সনদ প্রতিষ্ঠা করা।
রোববার (২৫ মে) দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আয়োজনে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, প্রথম ধাপের আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনেক বিষয়ে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। কিছু বিষয়ে দ্বিমত থাকলেও আমরা বিশ্বাস করি, সমাধানের পথ সবার অংশগ্রহণেই তৈরি হবে।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে এবং প্রতিটি দলের কাছ থেকে লিখিত সুপারিশ গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সুপারিশগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর আদর্শগত অবস্থান ভিন্ন হওয়ায় সব বিষয়ে ঐকমত্য সম্ভব না-ও হতে পারে। তবে আমরা চাই জনগণ জানুক কোন জায়গায় সমঝোতা হয়েছে, আর কোথায় হয়নি। কারণ ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে স্বচ্ছতা অপরিহার্য।
আলোচনায় তিনি স্পষ্ট করে বলেন, কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করলেই জাতীয় ঐকমত্য গঠিত হবে না। ‘নাগরিক সমাজের মধ্যেও একটি সমঝোতা প্রয়োজন। এ কারণেই সুশীল সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছি,’ বলেন অধ্যাপক রীয়াজ।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি মাহেন্দ্রক্ষণে উপস্থিত হয়েছি। একদিকে আশার সম্ভাবনা, অন্যদিকে পরিবর্তনের কঠিন চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ আমাদের অতীত আত্মত্যাগের ইতিহাসের প্রতি আমরা দায়বদ্ধ।’
আলোচনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
সুশীল সমাজের ১১ জন বিশিষ্ট প্রতিনিধি এ আলোচনায় অংশ নেন। তাদের মধ্যে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, নিরাপত্তা বিশ্লেষক আ ন ম মুনীরুজ্জামান, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক সামিনা লুতফা, অধ্যাপক ওয়ারেসুল করিম, মির্জা এম হাসান, ইলিরা দেওয়ান, আশরাফুন নাহার মিষ্টি, বাসুদেব ধর ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা রাজিয়া।
সভায় প্রতিনিধিরা বলেন, দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং টেকসই সংস্কারের জন্য জাতীয় সনদ অত্যন্ত জরুরি। তারা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই উদ্যোগকে সময়োপযোগী ও সাহসী পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন।
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী মাসেই একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর জনগণের মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত জাতীয় সনদের খসড়া প্রস্তুত করা হবে।
ডিআর/এমএইচএস