Logo

জাতীয়

ঈদের দিন কি ছাতা লাগবে, কেমন থাকবে আবহাওয়া

Icon

ডিজিটাল ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫, ২০:১১

ঈদের দিন কি ছাতা লাগবে, কেমন থাকবে আবহাওয়া

ঈদুল আজহা সামনে রেখে সারা দেশে চলছে প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য শহর থেকে মানুষ পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। কোরবানির পশুর হাটেও ভিড় বাড়ছে প্রতিদিন। 

কিন্তু এর মধ্যেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলছে থেমে থেমে বৃষ্টি, যা জনজীবনে কিছুটা ভোগান্তিও তৈরি করেছে। এমন অবস্থায় ঈদের দিন ও তার আগে আবহাওয়া কেমন থাকবে, এবং কোথাও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে কি না তা নিয়ে বাড়ছে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৭ মে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে যে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছিল, তার প্রভাবেই দেশে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। যদিও এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়নি, পরিণত হয়েছিল গভীর নিম্নচাপে। সেই নিম্নচাপ গত বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করার পর থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় এই বৃষ্টিপাত আরও কিছুদিন চলবে।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে থেমে থেমে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ঢাকায় শনিবার সকাল থেকেই বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা রোববারও চলতে পারে। 

তিনি বলেন, সিলেট, বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রামের কিছু কিছু জায়গায়ও এমন বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ২ জুনের দিকে বৃষ্টি কিছুটা কমে আসবে, তবে পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সপ্তাহজুড়ে চলবে মাঝারি বৃষ্টিপাত।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ওপর বৃষ্টিপাতের প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম থাকবে। তবে ঈদের দিন সারা দেশেই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তিন দিন আগে এ বিষয়ে আরও নির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব হবে।

তবে বৃষ্টির পাশাপাশি ঈদের সময় তাপমাত্রাও কিছুটা বাড়বে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হবে। 

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, ৭ জুনের পর তাপমাত্রা ৩২ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করতে পারে।

এদিকে আবহাওয়ার বার্তায় বলা হয়েছে, সমুদ্র বন্দরগুলোতে বর্তমানে ঝড়ো হাওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে সতর্ক সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। তবে দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিশেষ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি কিংবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ভারি বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। একইসঙ্গে ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে সাময়িক জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই। তবে টানা বৃষ্টির কারণে কিছু নদ-নদীর পানি বাড়ছে। গোমতী, মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বেড়েছে। মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তবে ফেনীতে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় সে সম্ভাবনাও কমে এসেছে।

সিলেট, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলের কয়েকটি নদীর পানি আগামী দুইদিন বাড়তে পারে। তবে এরপর তা কমে আসবে। তাই এই মুহূর্তে সেসব এলাকায় বন্যার আশঙ্কা নেই।

তবে ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই পানি ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার দিকে আসছে বলে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি কিছুটা বাড়বে। তবে আগামী ১০ দিনের মধ্যে বড় ধরনের বন্যা হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের কর্মকর্তারা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের শনিবার সকাল ৯টার পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের আট বিভাগেই কোথাও না কোথাও বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি চট্টগ্রামের বান্দরবানে ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সিলেটে ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

ওএফ

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

আবহাওয়া ঈদুল আজহা ঝড় ও বৃষ্টি বন্যা আগামীকালের আবহাওয়া

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর