বিশ্ব পরিবেশ দিবস আজ
প্লাস্টিক দূষণ রোধে সম্মিলিত উদ্যোগের আহ্বান

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ১০:০৬
-684117b41a9da.jpg)
আজ ৫ জুন, বিশ্ব পরিবেশ দিবস। পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) উদ্যোগে ১৯৭৩ সাল থেকে প্রতি বছর এই দিনটি পালন করা হয়ে আসছে। এবারের প্রতিপাদ্য—‘প্লাস্টিক দূষণ রোধ করুন’ (Beat Plastic Pollution)। আয়োজক দেশ দক্ষিণ কোরিয়া ইতোমধ্যেই ২০৪০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক দূষণমুক্ত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৪৩০ মিলিয়ন টনেরও বেশি প্লাস্টিক উৎপন্ন হয়, যার একটি বড় অংশ একবার ব্যবহারযোগ্য। ব্যবহারের পর এ প্লাস্টিকই পরিণত হচ্ছে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের উৎসে। সমুদ্র, নদী ও জলাশয় ছাড়িয়ে মাইক্রোপ্লাস্টিক এখন মানুষের খাদ্য ও পানীয়ের ভেতরেও প্রবেশ করছে, যা মানবদেহে স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনায় এখনও রয়েছে কাঠামোগত দুর্বলতা। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সচেতনতার অভাব, প্লাস্টিকের বিকল্প ব্যবহারে নিরুৎসাহ, ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের সীমিত প্রয়োগের কারণে সমস্যা আরও ঘনীভূত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, টেকসই সমাধানে প্রয়োজন ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে একযোগে পদক্ষেপ গ্রহণ।
তবে এ বছর ৫ জুন সরকারি ছুটি থাকায় বাংলাদেশ সরকারিভাবে দিবসটি উদযাপন করবে ২৫ জুন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ওইদিন রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে হবে মূল অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান, মাসব্যাপী বৃক্ষমেলা ও পরিবেশ মেলার উদ্বোধন করবেন। একই সঙ্গে পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে অবদানের জন্য জাতীয় পরিবেশ পদকও প্রদান করা হবে।
এদিকে সরকারি আয়োজনে বিলম্ব থাকলেও পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ইতোমধ্যেই মাঠে নেমেছে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন ও এনজিও। ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’, ‘ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ’, এবং ‘মিশন গ্রিন বাংলাদেশ’-এর মতো সংগঠন দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, র্যালি, মতবিনিময় সভা, মানববন্ধন ও প্রচারাভিযানের আয়োজন করেছে। মিশন গ্রিন বাংলাদেশের উদ্যোগে ৬৪টি পরিবেশবাদী সংগঠন দেশের প্রতিটি জেলায় একযোগে ১০০টির বেশি গাছ রোপণ করছে। এসব গাছ স্কুল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়িতে লাগানো হচ্ছে এবং দরিদ্র পরিবারগুলোকে উপহার হিসেবেও দেওয়া হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্লাস্টিক দূষণ রোধে শুধু নিয়ম বা সরকারি উদ্যোগ নয়, প্রয়োজন প্রতিটি নাগরিকের সচেতন অংশগ্রহণ। নিজেদের জীবনযাত্রায় পরিবেশবান্ধব অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিত করা সম্ভব।
এমএইচএস