-6843ad7e9c1b5.jpg)
ঈদের মোনাজাতে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করা হয়। ছবি : বাংলাদেশের খবর
পবিত্র ঈদুল আজহার আনন্দ ও আত্মত্যাগের বার্তা নিয়ে রাজধানীর দুই প্রধান ঈদ জামাত—জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ও জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে—ধর্মীয় শ্রদ্ধা, ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবের আবহে অনুষ্ঠিত হয়েছে। হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নেন এই জামাতগুলোতে, যেখানে নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় উচ্চারিত হয় আবেগঘন মোনাজাত।
শনিবার (৭ জুন) সকালে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৭টায়। ইমামতি করেন যাত্রাবাড়ীর তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. খলিলুর রহমান মাদানী। নামাজ শেষে তার খুতবা ও দোয়ার মধ্যে ফুটে ওঠে আত্মত্যাগের শিক্ষায় সমৃদ্ধ একটি ন্যায়ের সমাজ গঠনের প্রত্যয়। তিনি দেশবাসীর শান্তি, ন্যায্যতা, আন্তরিকতা ও পরস্পরের কল্যাণে একত্র হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
অন্যদিকে সকাল সাড়ে ৭টায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় দেশের প্রধান ঈদ জামাত। ইমামতি করেন বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ ও বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক। খুতবার পর তিনি দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর ঐক্য-সমৃদ্ধি এবং শান্তির জন্য মোনাজাত পরিচালনা করেন।
উভয় জামাতে দোয়া করা হয় দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যহীন, মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন একটি কল্যাণরাষ্ট্র গঠনের জন্য। প্রার্থনা করা হয় মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, দুনিয়া ও আখিরাতের শান্তি, সমাজে সদাচার ও আত্মিক উন্নতির জন্য। মোনাজাতে অংশ নেওয়া হাজারো মুসল্লি পরম করুণাময়ের দরবারে রুদ্ধ কণ্ঠে প্রার্থনা করেন।
জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত জামাতে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, কূটনীতিকবৃন্দ এবং রাজনৈতিক নেতাসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। শিশু, নারী ও প্রবীণদের অংশগ্রহণে ঈদের এই বৃহৎ জামাত পরিণত হয় এক উৎসবমুখর মিলনমেলায়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত ঈদগাহের মূল প্যান্ডেলে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। নারী মুসল্লিদের জন্য ছিল পৃথক নামাজের ব্যবস্থা। অপরদিকে বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭টায় প্রথম জামাতের পর পর্যায়ক্রমে আরও চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বায়তুল মোকাররম ও ঈদগাহ এলাকায় মোতায়েন ছিল বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য। প্রশাসনের এই সচেতন ব্যবস্থাপনায় মুসল্লিরা নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করেন এবং ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন পরস্পরের সঙ্গে কোলাকুলির মাধ্যমে।