অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের সরকারি সফরে সোমবার (৯ জুন) যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। এ সফরের মূল লক্ষ্য হচ্ছে যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া বাংলাদেশি অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগকে অগ্রাধিকার দেওয়া। বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে।

১০ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত চলবে এই সফর। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটিই তার প্রথম ইউরোপ সফর। সফরসূচি অনুযায়ী, ১১ জুন লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ১২ জুন তিনি সাক্ষাৎ করবেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে। একই দিনে লন্ডনের সেন্ট জেমস প্রাসাদে রাজা চার্লসের হাত থেকে 'কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড' গ্রহণ করবেন অধ্যাপক ইউনূস।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লন্ডনে বৈঠকগুলোর অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া অর্থ শনাক্ত ও তা দ্রুত ফেরত আনার প্রক্রিয়া। তবে এ নিয়ে কূটনৈতিক অগ্রগতির সম্ভাবনা নিয়ে কিছুটা সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।

সাবেক কূটনীতিক রাশেদ চৌধুরী মনে করেন, যতক্ষণ পর্যন্ত একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় না আসে, ততক্ষণ পর্যন্ত এ ধরনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক মহলে কাঙ্ক্ষিত গুরুত্ব পাবে না। ইউনূস সাহেবের উদ্যোগ আন্তর্জাতিকভাবে যতটা স্বাগত জানানো হয়েছিল, তা এখন কিছুটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য সব সময়ই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। তারা চায় বাংলাদেশেও জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি স্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক। এখনকার সরকারকে তারা একটি অন্তর্বর্তীকালীন বা সাময়িক প্রশাসন হিসেবেই বিবেচনা করছে।

তবে সফরে সম্মাননা পাওয়া অধ্যাপক ইউনূসের জন্য একটি বড় অর্জন হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড সামাজিক ন্যায়বিচার, শান্তি ও মানবিক উদ্যোগে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেওয়া হয়ে থাকে। এ সম্মাননাকে দেশের জন্যও গৌরবজনক বলে মন্তব্য করেছেন কূটনীতিকরা।

এই সফরের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন এবং নীতিগত আলোচনা শুরু হওয়ার সুযোগ তৈরি হতে পারে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক মহল। তবে এর বাস্তব সফলতা নির্ভর করবে ভবিষ্যতের রাজনৈতিক রূপরেখা ও কূটনৈতিক কৌশলের ওপর।

এমএইচএস