Logo

জাতীয়

ঈদযাত্রার ১২ দিনে ৩১২ জনের জীবনের ইতি

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫, ১৫:২৯

ঈদযাত্রার ১২ দিনে ৩১২ জনের জীবনের ইতি

ঈদের ছুটিতে প্রিয়জনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে গিয়ে অনেকেই ফিরেছেন লাশ হয়ে। কোরবানির ঈদ ঘিরে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতের মাত্র ১২ দিনে সারাদেশে ৩৪৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩১২ জন। আহত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৫৭ জন।

শুধু সড়ক নয়, নৌপথ ও রেলপথ মিলিয়েও ঘটেছে বহু প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। এ ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে।

বুধবার (১৮ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৩ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সময়কাল বিবেচনায় নিয়ে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছে সংস্থাটি।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন বলছে, সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল যেন মৃত্যুর ফাঁদ। প্রতিবেদনে সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্যই হলো, নিহতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিলেন মোটরসাইকেল আরোহী। ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছিল ১২১টি। এর মধ্যে নিহত হয়েছেন ১০৭ জন। যা শতকরা হারে ৩৪.২৯ শতাংশ।

সড়ক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, মোটরসাইকেলের অতিরিক্ত গতি, হেলমেটবিহীন চালনা ও প্রশিক্ষণহীন চালকই বড় দুর্ঘটনার মূল কারণ।

নৌ ও রেলপথেও ঝরেছে প্রাণ :
ঈদযাত্রা শুধু সড়কেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নৌপথেও ৯টি দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ৮ জন আহত হয়েছেন। রেলপথেও ৩২টি দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও ১৭ জন আহত হয়েছেন।

বিভাগ ও জেলা ভিত্তিক দুর্ঘটনার ভয়াবহ চিত্র :
ফাউন্ডেশনের পর্যালোচনায় ঈদের ১২ দিনে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। যেখানে ১১৬টি দুর্ঘটনায় ৮৭ জন নিহত হয়েছেন।

সিলেটে সবচেয়ে কম, এ বিভাগে ১৩টি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত হয়েছেন।

এককভাবে সর্বোচ্চ দুর্ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুর জেলায়। জেলায় ২৭টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত হয়েছেন।

একমাত্র চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় প্রাণহানিশূন্য ছিল।

কীভাবে ঘটছে এসব দুর্ঘটনা :
সার্বিক তথ্য পর্যালোচনা করে জানা যায়, মুখোমুখি সংঘর্ষে ২৩.৩৪%, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৪৬.৯৭% (সবচেয়ে বেশি), পথচারী চাপা পড়ে ১৩.২৫%, পেছন থেকে ধাক্কায় ১৪.৬৯% ও অন্যান্য ১.৭২%। 

সড়কের ধরন অনুযায়ী দুর্ঘটনা :
জাতীয় মহাসড়কে ঘটেছে ১৩৬টি (৩৯.১৯%) দুর্ঘটনা। আঞ্চলিক সড়কে ১২১টি, গ্রামীণ সড়কে ৩৪টি ও শহরে ৫৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।

যানবাহনের তালিকা—কে কতটা দায়ী?
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ছিল ৫৮৯টি। এর মধ্যে মোটরসাইকেল ১২৮টি, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক/সিএনজি/অটোরিকশা) ১২৬টি, বাস ১১৪টি, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স ৪৯টি, স্থানীয় যান (নসিমন, ভ্যান) ৪১টি, ট্রাক/কাভার্ডভ্যান/পিকআপ ৯৩টি, বাইসাইকেল ও রিকশা ১৩টি, অজ্ঞাত যান ১২টি।

দুর্ঘটনা রোধে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, এতো সংখ্যক প্রাণহানি একটি জাতীয় ট্র্যাজেডি। এর দায় রাষ্ট্র, প্রশাসন ও আমাদের সামগ্রিক সচেতনতাহীনতা—সবার। নীতিনির্ধারকদের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকের ভূমিকা এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এনএমএম/এমবি 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

সড়ক দুর্ঘটনা

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর